ঝিনাইদহে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী পালন : কার্পাসডাঙ্গায় ডিসি গোপাল চন্দ্র দাস
নিউজ ডেস্ক:গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান/ যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা ব্যবধান/ যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিস্টান। এ ভাবেই গেয়ে উঠতেন প্রেম, সাম্যবাদ ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। হাজারো শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পালিত হলো বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় ও ঝিনাইদহে পৃথক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নজরুল স্মৃতি বিজড়িত কার্পাসডাঙ্গা মিশনপল্লীর আটচালা ঘরের সামনে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি ফলকে জেলা প্রশাসন, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদ, কার্পাসডাঙ্গা প্রেসক্লাব, কার্পাসডাঙ্গা সাহিত্য সংসদ ও আটচালা ঘর মালিকের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় দামুড়হুদা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিসা সুলতানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি বলেন, ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন অসম্প্রদায়িকতার কবি। আমাদের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে কবির আর্দশ ধারণ করতে হবে। কবি ছিলেন জাত পাত ধর্ম বর্ণের উর্ধ্বে। তিনি মানুষকেই বড় করে দেখেছেন। তাইতো তিনি লিখেছেন গাহি সাম্যর গান মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।’
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা পারভীন, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সিব্বির আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনসুর বাবু, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক শাহ আলম সনি, ভাইস চেয়ারম্যান সহিদুল হক, সাহিদা বেগম, দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাকি সালাম, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজীর আহমেদ, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি আ. গফুর, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, আটচালা ঘর মালিক শ্রী প্রকৃতি বিশ্বাস বকুল, দামুড়হুদা উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক শওকত আলী, কার্পাসডাঙ্গা সাহিত্য সংসদের সভাপতি রবিউল হোসেন শুকলাল,
কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আ.রহমান, কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল বাশার, বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান, কার্পাসডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জলিল, সাধারণ সম্পাদক হাশেম রেজা হাসমত, সহসভাপতি আতিয়ার রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল, ইকবাল রেজা, শরীফ রতন, ইকরামুল হক পিপুল, মাহফুজ মামুন, জহির রায়হান, বাদল, আ.হাকিম মেম্বর, গিয়াসউদ্দীনসহ কার্পাসডাঙ্গা এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন জেলা রোভার ও কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের রোভার সদস্যদের সমন্বয়ের একটি চৌকস দল। পরে ব্যক্তি পর্যায়ে দামুড়হুদা উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক শওকত আলী কবির প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা নুরুল আমিন, পবিত্র গীতা পাঠ করেন শ্রী রঘুনাথ পাল ও পবিত্র বাইবেল পাঠ করেন সোপান সরকার।
ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। জেলা শিশু একাডেমীর আয়োজনে গতকাল শনিবার সকালে শিশু একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আয়ুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক সাইফুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক উপাধ্যক্ষ এন এম শাহজালাল, নৃত্য প্রশিক্ষক দোল আফরোজ ও সংগীত শিল্পী আব্দুল গাফফার। অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা শেষে কবিতা আবৃতি, নৃত্য ও নজরুল সংগীত পরিবেশন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫০ জন শিক্ষার্থী ২টি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করে।
এদিকে, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় উত্তোরণ প্রিক্যাডেট হলরুমে গতকাল শনিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়। প্রবীণ শিক্ষক আলহাজ্ব সিরাজ উদ্দিন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও গীতিকার ননী গোপাল বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ শেখ কবিরুল ইসলাম, কবি রণক মুহাম্মদ রফিক, রণভী শের, প্রভাষক আনিসুজ্জামান, কবি সরোয়ার সবুজ, অনিক সিদ্দীকি, মিরাজ হোসেন ও উত্তোরণ প্রিক্যাডেট স্কুলের পরিচালক ও সিপিবি নেতা কমরেড স্বপন বাগচী।