প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সপ্তাহব্যাপী আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, বাড়ি ভাঙচুর ও মারপিটের পর গতকাল সোমবার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বল্লমের আঘাতে সুফিয়া খাতুন (৫৫) ও মকলেছুর রহমান পাইলট (৫০) নিহত হয়েছেন। সুফিয়া ভাটবাড়িয়া গ্রামের জালাল উদ্দীনের স্ত্রী এবং পাইলট বৃত্তিপাড়া গ্রামের মৃত আনসার খন্দকারের ছেলে। পাইলট গতকাল দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে গতকাল সকালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান মামুন ও আওয়ামী লীগ নেতা জুলফিকার কায়সার টিপু গ্রুপের সংঘর্ষে সুফিয়া খাতুন নিহত হন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও কাতলাগাড়ি বাজার দখলকে কেন্দ্র করে সপ্তাহব্যাপী বাজার সংলগ্ন কৃষ্ণনগর, কৃত্তিনগর-ভুলুন্দিয়া, ব্রক্ষ্মপুর, পুরাতন বাখরবাসহ বিভিন্ন গ্রামে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এক তরফা বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। গতকাল কাতলাগাড়ি গরুর বাজার দখল করার জন্য চেয়ারম্যান গ্রুপের দলীয় সমর্থকরা বিভিন্ন গ্রামের মত ভাটবাড়িয়া গ্রামেও কর্মী চাঙ্গা করতে তৎপর থাকে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে টিপু গ্রুপের সমর্থক জালাল উদ্দিনের বাড়ি-ঘরে প্রতিপক্ষ মামুন গ্রুপের লোকজন হামলা চালায়। অতর্কিত হামলায় জালাল উদ্দিনের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৫৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। সংঘর্ষে জালাল উদ্দিনের ছেলে সাগর, বিল্লাল, আকবর আলির ছেলে জাহিদুলসহ বেশকয়েকজন আহত হয়। এ সময় ভাটবাড়িয়া গ্রামের উভয় পক্ষে বেশ কিছু বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর লুটপাট করা হয়। বর্তমানে এলাকায় সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকালে সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর কর্মী সমর্থকরা বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুনের কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও ৭ জন আহত হয়। আহতদের শৈলকুপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুত্বর আহত মকলেছুর রহমান পাইলটকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পাইলট চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভাটবাড়িয়া গ্রামসহ কাতলাগাড়ি বাজার এলাকায় প্রয়োজনীয় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাইলট নামে আরেকজন মারা গেছেন বলেও শুনেছি।