নিউজ ডেস্ক:
মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মাঝপাড়া গ্রামের মৃত হোসেন শেখের ছেলে মল্লিক শেখ (৭০)। একটা হাত অকেজো, তাই ঠিকমতো কাজও করতে পারেন না তিনি। ছেলেরা সবাই আলাদা হয়ে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। মল্লিক শেখ ও তাঁর স্ত্রী মাঠে যেয়ে ধান, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ কুড়িয়ে নিয়ে এসে সেগুলো বিক্রি করে সংসার চালান। সরকারি খাস জমিতে একটি ছোট কুঁড়েঘর করে বসবাস করতেন তাঁরা। তাঁদের ঘরের সঙ্গেই ছিল একটি ছোট ছাগলের ঘর।
প্রতিদিনের মতো গত বুধবার সন্ধ্যার কিছু আগে মল্লিক শেখ মশা তাড়ানোর জন্য তাঁর ছাগলের ঘরে সাজাল দিয়ে বাইরে চায়ের দোকানে চা খেতে যান। ওই সময় তাঁর স্ত্রীও যান পাশের বাড়িতে। এ সময় সাজালের আগুনের ফুলকি উড়ে যেয়ে ঘরের পাশে রাখা পাটখড়িতে লাগে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁদের ঘরে ঘটে যায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা। ওই আগুন নেভাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে পানি ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তবে ঘরের ভেতর থাকা কোনো জিনিস ভালো অবস্থায় বের করতে পারেননি তাঁরা। এমনকি ছাগলটাও বাঁচানো যায়নি। এদিকে, ঘরে আগুন লেগে কাঁথা-কম্বল, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আসবাবসহ কিছু গচ্ছিত টাকা সব পুড়ে ছাই হওয়ায় একদম নিঃস্ব হয়ে গেছেন মল্লিক শেখ।
স্থানীয় লোকজন জানান, মল্লিক শেখ খুব অসহায় একজন মানুষ। স্বামী-স্ত্রী মিলে মাঠ থেকে ধান, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ কুড়িয়ে যেটুকু পান, সেগুলো সব বিক্রি করে চলে তাঁদের সংসার। এমন একটা নির্মম ঘটনা তাঁদের জন্য আরও দুঃখ বয়ে আনল। নিজেরাই ঠিকমতো চলতে পারেন না। এক বেলা খেয়ে, এক বেলা না খেয়ে দিন কাটান। যেখানে ঠিকমতো নিজেদের খাবারই জোগাড় করতে পারেন না, সেখানে এত টাকা খরচ করে নতুন করে ঘর তৈরি করবেন কীভাবে। তবে সরকার থেকে তাঁদের যদি সহযোগিতা করা হয়, তাহলে তাঁরা হয়তো মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবেন।
বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন বলেন, মল্লিক শেখকে একটি ঘর তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।