মাসুদ রানা. মেহেরপুর: সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্বাধীনতা বিরোধীরা যদি ২০১৪ সালের মত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মত আগামী নির্বাচন বাঞ্চাল করার ষড়যন্ত্র বা আগুন সন্ত্রাস করে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু । তিনি আর বলেন প্রধানমন্ত্রীর নেত্রীত্বে দেশে অবকাঠামো গত উন্নয়নসহ শিক্ষা,স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থায় দেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল। আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরের মুজিবনগরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননের শেখ হাসিনা মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সকল কথা বলেন। আমির হোসেন আমু বলেন, সকল গণতান্ত্রিক দেশে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় এদেশেও সেই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। বিএনপি জামায়াতকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আপনারা যাদের কথায় উঠাবসা করেন সেই সকল দেশেও বর্তমান সরকারের অধিনেই নির্বাচন হয়। তাই শেখ হাসিনার অধিনেই আগামি নির্বাচন হবে ।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, আব্দুর রহমান এমপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক এমপি, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সসম্পাদক আবু সাঈদ আল স্বপন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবিএম তাজুল ইসলাম এমপি, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ এমপি, উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম মিলন, পারভিন জামান কল্পনা, জাতীয় সংসদের হুইপ সোলাইমান হক জোয়ার্দার এমপি, আব্দুল হাই এমপি, মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন, সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সেলিনা আখতার বানু, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিয়াজান আলী, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলি আজগর টগর, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারি সাইফুজ্জামান শেখর, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সদর উদ্দীন খান, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ডিসেম্বর মাসেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এই নির্বাচন মন্ত্রী এমপি হওয়ার নির্বাচন নয়, স্বাধীনতা রক্ষা করার নির্বাচন। এই নির্বাচনে নৌকার বিজয় করতে হবে। আওয়ামীলীগকে বিজয় করতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই। নাসিম বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। তত্তাবধায়ক সরকারে নির্বাচন হবে না। তত্তাবধায়ক মরে গেছে। যে মরে গেছে সে আর আসবে না। বর্তমান সরকারের অধিনেই নির্বাচন হবে। অন্য কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে না, হবে না, হবে না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি নেত্রী জেলে গেছেন দুর্নীতির দায়ে। আওয়ামীলীগ তাকে জেলে পাঠায় নাই। ১০ বছর আগে মামলা হয়েছিল। রায় হয়েছে আপনি জেলে গিয়েছেন। আইভি রহমানকে হত্যা করে বিচার করেছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। তারপরও বলি আমরা চাই আপনি ফিরে আসুন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ১৭ এপ্রিল ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্ভব নয়। যারা এই ১৭ এপ্রিল পালন করে না তারা অবশ্যই স্বাধীনতাকে স্বীকার করে না। তিনি বলেন, বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের সবনেতাই চোর, তাদের কাছে আত্মমর্যাদাশীল জাতি বলে কিছু নেই। বিএনপি-জামায়াত এমনই এক অশুভ শক্তি যারা ক্ষমতায় আসলে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব পর্যন্ত পরাস্ত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একে এম মোজাম্মেল হক বলেন, এই মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে নতুন করে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ব্যয়ে নতুন প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছি। প্রায় ৩৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে শিল্পমন্ত্রীর নেত্রীত্বে জাতীয় নেতাবৃন্দরা মুজিবগরে পৌছে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের স্মরণ করেন এবং বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, আনছার ও ভিডিপি, বিএনসিসি এবং গার্লস গাইড সদস্যরা গর্ড অব অনার প্রদান করেন।