চুয়াডাঙ্গায় উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা দুজনের শরীরে মিলেছে কোভিড-১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে আরও ১৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ১০৮ জনে। গতকাল সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত সালাম উদ্দীন (৭০) নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গত সোমবার দিবাগত রাতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া আব্দুস সাত্তারের (৬৫) শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া করোনা উপসর্গে নিয়ে মারা যাওয়া জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামের আরও একজনের ফলাফল গতকাল সকালে সিভিল সার্জন অফিস প্রকাশ করে। তাঁর রিপোর্টও পজিটিভ আসে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৬০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠায়। এর মধ্যে গতকাল ২২ জনের নমুনার ফলাফল এসেছে। যার মধ্যে করোনা পজিটিভ ৯ জন ও নেগেটিভ ১৯ জন। এদিকে, সোমবার (১৭ আগস্ট) সংগৃহীত নমুনার বাকি ২৯ জনের রিপোর্ট এসেছে। ২৯ জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ জন ও রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ২১ জনের। গতকাল নতুন শনাক্ত ১৭ জনের মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলার ৭ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ৭ জন ও জীবননগর উপজেলার ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ও নারী ৪ জন। বয়স ১৮ বছর থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ গতকাল ৭৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
এদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালাম উদ্দীন নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত সালাম উদ্দীন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি পাড়ার মৃত মফিজ উদ্দীনে ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ঠাণ্ডা, জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। করোনা উপসর্গ থাকায় করোনা পরীক্ষার জন্য আক্রান্ত সালাম উদ্দীন ১১ আগস্ট সদর হাসপাতাল থেকে নমুনা দেন। ১২ আগস্ট রাতে প্রাপ্ত ফলাফলে তাঁর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ১৩ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
এছাড়াও গতকাল সকালে সিভিল সার্জন অফিস উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া দুজনের রিপোর্ট প্রকাশ করে। জীবননগর উপজেলার ধোপাখালি গ্রামের দরবেশ আলী (৪৬) ও সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে মারা যাওয়া আব্দুস সাত্তারের (৬৫) রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবির জানান, হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত সালাম উদ্দীনের মৃত্যু হয়েছে। শরীরে করোনা উপসর্গ থাকায় ১১ আগস্ট সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য সালাম উদ্দীন সদর হাসপাতাল থেকে নমুনা দেন। পর দিন ১২ আগস্ট রাতে প্রাপ্ত ফলাফলে তাঁর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ১৩ আগস্ট সকালে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৪ হাজার ৬১৭টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৪ হাজার ৪৩৬টি, পজিটিভ ১ হাজার ১০৮ জন, নেগেটিভ ৩ হাজার ২৩৮ জন। ফলাফল পেতে বাকি আছে ১৮১টি নমুনার। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হোম আইসোলেশন থেকে ১৭ জন ও আলমডাঙ্গা উপজেলার হোম আইসোলেশন থেকে ১ জনসহ নতুন ১৮ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থতার সংখ্যা ৫৮০ জন ও মৃত্যু ২৫ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জেলায় গতকাল হোম আইসোলেশনে ছিলেন ৪৪১ জন ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ছিলেন ৫৭ জন।