নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপিতে মুদি ব্যবসায়ী সেলিমকে হাতুড়ি পেটা করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ উদ্ধার করা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা ও ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত লোহার তৈরি হাতুড়ি। গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন গড়াইটুপি গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩২) ও একই এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুর রউফ (৩০)। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি মোড়ের মুদি ব্যবসায়ী একই এলাকার সিদ্দিকের ছেলে সেলিম গত শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে নিজ বাড়ির গেটে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা লোহার হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁকে আহত করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাঁর বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেন। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এদিকে, ছিনতাইয়ের সংবাদ পেয়ে জড়িতদের আটক করতে পুলিশ সুপারের তত্বাবধানে অভিযান শুরু করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ। অভিযানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহর নির্দেশে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (অপরেশন) মাসুদুর রহমান, উপপরিদর্শক(এসআই) একরামুল হোসাইনসহ তিতুদহ ফাঁড়ি পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্য ঘেটে ঘটনার দেড় ঘণ্টার মধ্যেই একই এলাকার নানার বাড়িতে বসবাস করা আব্দুল মান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন ও শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করা আব্দুর রউফকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতে আটক ব্যক্তিরা ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তিতে উদ্ধার করা হয় লোহার তৈরি হাতুড়ি ও ১ লাখ ২২ হাজার টাকা। বাকি টাকাও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সদর থানা হেফাজতে সোপর্দ করা হয়েছে। আজ তাঁদের আদালতে প্রেরণ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে থানার পুলিশ। আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তাঁরা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে আলমগীর হোসেনের সঙ্গে দোকান বন্ধ করে প্রতিদিন বাড়ি যেতেন সেলিম। ঘটনার দিন সেলিমের দোকানে হালখাতা ছিল। টাকা-পয়সা গুছিয়ে বাড়ি যেতে দেরি হবে ভেবে সেলিম আলমগীরকে বলে রেখেছিল, তাঁর সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার জন্য। প্রতিদিন সেলিমের সঙ্গে বাড়ি গেলেও ওই দিন এক সঙ্গে বাড়ি যেতে রাজি হননি আলমগীর। উপায় না পেয়ে হালখাতার টাকা-পয়সা গুছিয়ে একা একাই বাড়ির পথে রওনা দেন সেলিম। বাড়ির গেটের সামনে পৌঁছানো মাত্রই পূর্বপরিকল্পিত ওই হামলার শিকার হন তিনি।