আজ থেকে শুরু হচ্ছে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অভিযান
সভায় সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদকে শোকজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ
নিউজ ডেস্ক:সব মতভেদ ও দূরত্বের অবসান ঘটিয়ে প্রশাসনের নিরাপত্তার চাদরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় দামুড়হুদা নাটুদহের আটকবরে অবস্থিত আট শহীদ স্মৃতি কমপ্লেক্স ভবনে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং উপজেলা ও পৌর আ.লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার কার্যক্রম শুরু করা হয়।
সভায় আলোচনা পর্বে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন দিন চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলায় সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করা হবে। আজ রোববার বিকেল চারটায় আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে, আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে, একই দিন বিকেল চারটায় দামুড়হুদা উপজেলা অডিটরিয়ামে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভা এবং বিকেল চারটায় ডিঙ্গেদহ ইউপি ভবনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করা হবে। সাংগঠনিক বিষয়ের ওপর আলোচনায় উঠে আসে তৃণমূলের কমিটি গঠনের কথা। আলোচনা থেকে নির্ধারণ করা হয়, আগামী জুলাই-আগস্ট মাসের মধ্যে সব পৌর ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন সম্পন্ন করতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কোনো পরিবারের সদস্য জেলা, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন, এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিতেও স্থান পাবে না।
এ ছাড়াও বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদের কর্তব্য নিয়ে সভায় প্রশ্ন ওঠে। উক্ত নির্বাচনে তৃণমূল থেকে প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করে দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রতি উপজেলা থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অন্তত তিনজনের নাম পাঠানোর নির্দেশনা ছিল দলের নীতিনির্ধারকদের। ওই মনোনয়ন তালিকায় (ফরওয়ার্ডিং) স্বাক্ষর করার কথা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের। অথচ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ কোনো তালিকায় স্বাক্ষর করেননি। তিনি কেন সে সময় তৃণমূল থেকে প্রেরিত কোনো তালিকায় স্বাক্ষর করেননি, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে শোকজ করা হবে বলে এ সভা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে আজাদুল ইসলাম আজাদ শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় সে সময় তৃণমূল মনোনীত প্রার্থী তালিকায় স্বাক্ষর করতে পারেননি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আমি কেন স্বাক্ষর করিনি, তা কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা খুব ভালো করে জানেন। আমি তখন শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঢাকাতে ছিলাম। অসুস্থতার কারণে ঢাকাতে থাকায় আজকের (শনিবার) সভায়ও আমি উপস্থিত হতে পারিনি।’ এ ছাড়াও তিনি মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদকের কাছে জেলা কমিটির নেতাদের বেশকিছু বিষয়ে ক্ষোভ ও আস্থাহীনতা প্রকাশ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস, সহসভাপতি হাজী আলী আজগার টগর (এমপি), মুন্সী টিপু সুলতান পান্না, মোশারফ হোসেন, নাসির উদ্দীন আহম্মেদ, খুস্তার জামিল, অ্যাড. আব্দুর রশিদ মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, অ্যাড. মুহা. শামসুজ্জোহা, হাবিবুর রহমান লাভলু, দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. আবু তালেব বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস ওয়ারা সুন্না, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এ এম জাকারিয়া আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান, মাসুদ উজ্জামান লিটু, অ্যাড. আব্দুল মালেকসহ ৭১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটির ৬০জন। এ ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান নান্নু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন হেলা, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মনজু, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মর্তুজা, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানসহ সব উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা উপস্থিত ছিলেন।