মঙ্গলবার | ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে Logo বেগম খালেদা জিয়া’র আশু রোগমুক্তি কামনায় ৮ নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির আধুনিকায়নে ৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ

যে লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন অ্যাপেন্ডিক্স বিস্ফোরিত হতে চলেছে !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৩৮:১৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৭৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

বৃহদান্ত্র এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের সংযোগস্থলে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একটি ছোট থলের মতো অঙ্গ অ্যাপেন্ডিক্স। এই অঙ্গটি অতিরিক্ত একটি অঙ্গ।
আমাদের দেহে এই অঙ্গের কোনো কাজ নেই। তবে বিশ্বের প্রায় ৫% মানুষের জন্য এই অঙ্গটি জরুরি চিকিৎসা পরিস্থিতি তৈরি করে। যে রোগের নাম অ্যাপেনডিসাইটিস।

অ্যাপেনডিসাইটিস এর কারণে আপনার মৃত্যুও হতে পারে। শ্লেষ্মা, পরজীবী বা পায়খানা আটকে যদি অ্যাপেন্ডিকিক্সের মুখ বন্ধ হয়ে যায় তখনেই বিপত্তিটা ঘটে। এর ফলে হঠাৎ করেই তীব্র প্রদাহ তৈরি হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সংক্রমিত হয়।

আর তখনই অ্যাপেনডিসাইটিসের প্রথম লক্ষণ দেখা দেয়। আর প্রথম লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। আর নয়তো বিপদ ঘটে যাবে।

দেরি হলেই অ্যাপেনডিক্স বিস্ফোরিত হয়ে তলপেটসহ পুরো পাকস্থলিতেই ঝিল্লির প্রদাহ ও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে রক্তে বিষক্রিয়া হয়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে।

সুতরাং আপনি যদি নিচের এই লক্ষণগুলির কোনো একটি দেখতে পান তাহলে যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোনো হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

নাভির চারপাশে ব্যথা:

আমাদের তলপেটের ডান পাশে অবস্থিথ অ্যাপেনডিক্স। আর সেখানেই আপনি অ্যাপেনডিসাইটিস এর ব্যথা অনুভব করবেন। প্রথমে নাভির চারপাশে হালকা ব্যথা দিয়ে শুরু হবে এই ব্যথা। পরে তা তলপেটের ডান পাশে তীব্র আকারে ছড়িয়ে পড়বে। বাম পাশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাঁটলে, পা বা তলপেট নাড়ালে, হাসলে, কাশি দিলে বা হাঁচি দিলে অথবা উঁচুনিচু রাস্তায় গাড়িতে যাওয়ার সময় ঝাঁকি খেলে এই ব্যথা আরো বাড়তে থাকে।

দ্রুত বেড়ে চলা ব্যথা:

অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথা খুব দ্রুত বাড়ে। অনেক সময় মাত্র কয়েকঘন্টার ব্যবধানে এই ব্যথা তীব্র আকার ধারন করে। অনেক সময় এই ব্যথা এত তীব্র হয় যে তা রোগীকে গভীর ঘুম থেকেও জাগিয়ে তুলতে পারে।

তীব্র জ্বর, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া এবং কাঁপুনি:

এই লক্ষণগুলো সাধারণত নির্দেশ করে যে আপনার দেহের কোথাও সংক্রমণ হয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গে যদি তলপেটে তীব্র ব্যথা থাকে তাহলে এসব লক্ষণ নিশ্চিতভাবেই অ্যাপেনডিসাইটিসের বহিঃপ্রকাশ।

বমিভাব, এবং বারবার বমি করা:

পাকস্থলিতে সংক্রমণ হলেও এমন লক্ষণ দেখা দেয়। কিন্তু কেউ যদি টানা ১২ ঘন্টা ধরে বারবার বমি করতে থাকে এবং তলপেটে তীব্র ব্যথার পাশাপাশি ডায়রিয়াও হয় তাহলে ধরে নিতে হবে তার অ্যাপেনডিসাইটিস হয়েছে।

ক্ষুধামান্দ্য:

ক্ষুধামান্দ্যের সঙ্গে সঙ্গে তলপেটে তীব্র ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া হলে বুঝতে হবে আপনি অ্যাপেনডিসাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য:

ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে যদি ২-৩ দিন ধরে পেটে ব্যথা করে তাহলে তা অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষণ। আর পায়খানার সঙ্গে শ্লেষ্মা বের হলে এবং তলপেটের ডানপাশে ব্যথা থাকলে তাও অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষণ।

পেট ফোলা এবং পেটফাঁপা:

পেট ফোলা বা ফাঁপা এবং অনবরত বায়ুত্যাগের ঘটনা কখনো সখনো স্বাভাবিকভাবেই হতে পারে। কিন্তু টানা আটঘন্টা ঘুমানোর পরও যদি পেট ফাঁপা দূর না হয় এবং পরের কয়েকদিন ধরে থাকে তাহলে আপনার অ্যাপেনডিসাইটিস হয়েছে। এর পাশাপাশি আপনার তলপেটেও ব্যথা থাকবে।

পেটে চাপ দিলে ব্যথা হওয়া:

তলপেটের ডান পাশে চাপ দিলে যদি ব্যথা হয় তাও অ্যাডেনডিসাইটিসের বড় লক্ষণ। তবে তলপেটে চাপ না দেওয়াই ভালো এতে আপনার অ্যাপেনডিক্সের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

রক্তে শ্বেতকণিকার হার বেড়ে যাওয়া:

অ্যাপেনডিসাইটিস একটি সংক্রমণ। আর এসসময় রক্ত পরীক্ষা করালে রক্তে আপনি শ্বেতকণিকার উচ্চহারে উপস্থিতি দেখতে পাবেন। দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা দেহের ভেতরে কোনো বড়সড় সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করলে রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ বেড়ে যায়।

এসবের কোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ দেখা গেলেই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে ও হাসপাতালে চলে যান। কারণ কোনো ওষুধে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। এর একমাত্র চিকিৎসা হলো বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই অপারেশনের মাধ্যমে অ্যাপেনডিক্স নামের ওই অদরকারি অঙ্গটি কেটে ফেলে দেওয়া।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক

যে লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন অ্যাপেন্ডিক্স বিস্ফোরিত হতে চলেছে !

আপডেট সময় : ১২:৩৮:১৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

বৃহদান্ত্র এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের সংযোগস্থলে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একটি ছোট থলের মতো অঙ্গ অ্যাপেন্ডিক্স। এই অঙ্গটি অতিরিক্ত একটি অঙ্গ।
আমাদের দেহে এই অঙ্গের কোনো কাজ নেই। তবে বিশ্বের প্রায় ৫% মানুষের জন্য এই অঙ্গটি জরুরি চিকিৎসা পরিস্থিতি তৈরি করে। যে রোগের নাম অ্যাপেনডিসাইটিস।

অ্যাপেনডিসাইটিস এর কারণে আপনার মৃত্যুও হতে পারে। শ্লেষ্মা, পরজীবী বা পায়খানা আটকে যদি অ্যাপেন্ডিকিক্সের মুখ বন্ধ হয়ে যায় তখনেই বিপত্তিটা ঘটে। এর ফলে হঠাৎ করেই তীব্র প্রদাহ তৈরি হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সংক্রমিত হয়।

আর তখনই অ্যাপেনডিসাইটিসের প্রথম লক্ষণ দেখা দেয়। আর প্রথম লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। আর নয়তো বিপদ ঘটে যাবে।

দেরি হলেই অ্যাপেনডিক্স বিস্ফোরিত হয়ে তলপেটসহ পুরো পাকস্থলিতেই ঝিল্লির প্রদাহ ও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে রক্তে বিষক্রিয়া হয়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে।

সুতরাং আপনি যদি নিচের এই লক্ষণগুলির কোনো একটি দেখতে পান তাহলে যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোনো হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

নাভির চারপাশে ব্যথা:

আমাদের তলপেটের ডান পাশে অবস্থিথ অ্যাপেনডিক্স। আর সেখানেই আপনি অ্যাপেনডিসাইটিস এর ব্যথা অনুভব করবেন। প্রথমে নাভির চারপাশে হালকা ব্যথা দিয়ে শুরু হবে এই ব্যথা। পরে তা তলপেটের ডান পাশে তীব্র আকারে ছড়িয়ে পড়বে। বাম পাশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাঁটলে, পা বা তলপেট নাড়ালে, হাসলে, কাশি দিলে বা হাঁচি দিলে অথবা উঁচুনিচু রাস্তায় গাড়িতে যাওয়ার সময় ঝাঁকি খেলে এই ব্যথা আরো বাড়তে থাকে।

দ্রুত বেড়ে চলা ব্যথা:

অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথা খুব দ্রুত বাড়ে। অনেক সময় মাত্র কয়েকঘন্টার ব্যবধানে এই ব্যথা তীব্র আকার ধারন করে। অনেক সময় এই ব্যথা এত তীব্র হয় যে তা রোগীকে গভীর ঘুম থেকেও জাগিয়ে তুলতে পারে।

তীব্র জ্বর, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া এবং কাঁপুনি:

এই লক্ষণগুলো সাধারণত নির্দেশ করে যে আপনার দেহের কোথাও সংক্রমণ হয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গে যদি তলপেটে তীব্র ব্যথা থাকে তাহলে এসব লক্ষণ নিশ্চিতভাবেই অ্যাপেনডিসাইটিসের বহিঃপ্রকাশ।

বমিভাব, এবং বারবার বমি করা:

পাকস্থলিতে সংক্রমণ হলেও এমন লক্ষণ দেখা দেয়। কিন্তু কেউ যদি টানা ১২ ঘন্টা ধরে বারবার বমি করতে থাকে এবং তলপেটে তীব্র ব্যথার পাশাপাশি ডায়রিয়াও হয় তাহলে ধরে নিতে হবে তার অ্যাপেনডিসাইটিস হয়েছে।

ক্ষুধামান্দ্য:

ক্ষুধামান্দ্যের সঙ্গে সঙ্গে তলপেটে তীব্র ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া হলে বুঝতে হবে আপনি অ্যাপেনডিসাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য:

ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে যদি ২-৩ দিন ধরে পেটে ব্যথা করে তাহলে তা অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষণ। আর পায়খানার সঙ্গে শ্লেষ্মা বের হলে এবং তলপেটের ডানপাশে ব্যথা থাকলে তাও অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষণ।

পেট ফোলা এবং পেটফাঁপা:

পেট ফোলা বা ফাঁপা এবং অনবরত বায়ুত্যাগের ঘটনা কখনো সখনো স্বাভাবিকভাবেই হতে পারে। কিন্তু টানা আটঘন্টা ঘুমানোর পরও যদি পেট ফাঁপা দূর না হয় এবং পরের কয়েকদিন ধরে থাকে তাহলে আপনার অ্যাপেনডিসাইটিস হয়েছে। এর পাশাপাশি আপনার তলপেটেও ব্যথা থাকবে।

পেটে চাপ দিলে ব্যথা হওয়া:

তলপেটের ডান পাশে চাপ দিলে যদি ব্যথা হয় তাও অ্যাডেনডিসাইটিসের বড় লক্ষণ। তবে তলপেটে চাপ না দেওয়াই ভালো এতে আপনার অ্যাপেনডিক্সের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

রক্তে শ্বেতকণিকার হার বেড়ে যাওয়া:

অ্যাপেনডিসাইটিস একটি সংক্রমণ। আর এসসময় রক্ত পরীক্ষা করালে রক্তে আপনি শ্বেতকণিকার উচ্চহারে উপস্থিতি দেখতে পাবেন। দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা দেহের ভেতরে কোনো বড়সড় সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করলে রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ বেড়ে যায়।

এসবের কোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ দেখা গেলেই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে ও হাসপাতালে চলে যান। কারণ কোনো ওষুধে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। এর একমাত্র চিকিৎসা হলো বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই অপারেশনের মাধ্যমে অ্যাপেনডিক্স নামের ওই অদরকারি অঙ্গটি কেটে ফেলে দেওয়া।