নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় জামায়াতের ৪৪ জন নারী সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক শুরা সদস্য রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হাটবোয়ালিয়া গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুর রহমান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে বিশেষ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। যার মামলা নং-১৯। আজ তাদের সংশ্লিষ্ট মামলায় চুয়াডাঙ্গা আদালতে প্রেরণ করা হবে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, হাটবোয়ালিয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম টিটুর বাড়িতে জামায়াতের প্রায় অর্ধশত নারী সদস্য গোপন বৈঠক করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শুরু দিকে বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও বাড়ি মালিকসহ জামায়াতের ৪৪ জন নারী সদস্য পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা পরিকল্পনা মামলা দায়ের হয়েছে। আজ তাদের সংশ্লিষ্ট মামলায় চুয়াডাঙ্গা আদালতে প্রেরণ করা হবে
পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম জানান, ঈদের আগেই চুয়াডাঙ্গায় বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল তারা। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই গোপন বৈঠক করছিল জামায়াতের নারী সদস্যরা। অভিযান চলাকালে উদ্ধার করা হয়েছে জিহাদি বই ও চাঁদা আদায়ের রশিদ। আটককৃতদের থানা হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও জানান এসপি।
জামায়াত ইসলামীর চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট রুহুল আমীন জানান, আলমডাঙ্গার হাটবোলিয়ার যে বাড়ী থেকে ধর্মপ্রাণ মহিলাদের আটক করা হয়েছে, সেই বাড়ীর মালিকের শ্বশুরের আত্মার শান্তি কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন ওই বাড়ীর মালিক। যেটা সকালের দিকে মহিলাদের নিয়ে ও সন্ধ্যায় পুরুষদের নিয়ে ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার আগেই জামায়াত ইসলামীর মেয়েরা নাশকতার পরিকল্পনা করছে এমন অভিযোগ তুলে নিরীহ ধর্মপ্রাণ মহিলাদের দুপুরের দিকে আটক করে পুলিশ। পবিত্র রমজান মাসে কথিত নাশকতার ধূয়া তুলে নিরীহ ধর্মপ্রাণ মহিলাদের এই আটক অত্যন্ত লজ্জাজনক। নিরীহ ধর্মপ্রাণ মহিলাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন রুহুল আমীন।
জামায়াত ইসলামীর চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আমীর আনোয়ারুল হক মালিক জানান, ইফতার ও দোয়া মাহফিল থেকে নিরীহ মা-বোনদের আটক করে যে হয়রানী দেওয়া হচ্ছে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিরীহ মহিলাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
উল্লেখ্য, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মোট ৪৮ জনকে আটক করে। পরে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে ৪ জন নারীকে মুচলেকায় মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম। নির্দেশ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মুন্সী ৪ জনকে ছেড়ে দেন। ৪ জন নারীর মধ্যে ১জন অন্তঃসত্বা, ১জন প্রতিবন্ধী, একজন বৃদ্ধা ও অসুস্থসহ একজন নারীর কোলে ছোট শিশু সন্তান থাকায় এই মানবিক দিক বিবেচনায় নেন এসপি এবং ওসি। এই মানবিক দিক বিবেচনা করায় অনেকে এসপি ও ওসি ধন্যবাদও জানান।