নবীগঞ্জে গ্রেফতারকৃত আলোচিত রাখা এখন শ্রী ঘরে
মোঃ সুমন আলী খাঁন, নবীগঞ্জ থেকে ॥ প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না স্বামী হত্যাকারী আলোচিত সৈয়দা রাখা বেগম (৩৫)। তাকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে আদালতে প্রেরণ করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাত অনুমান ১০ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ থানার এস আই চাঁন মিয়ার নেতৃতে একদল পুলিশ পলাতক আসামী সৈয়দা রাখা বেগমের বোনের বাড়ী নবীগঞ্জ উপজেলার হরিনগর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃত সৈয়দা রাখা বেগম নবীগঞ্জ উপজেলার নাদামপুর গ্রামের সৈয়দ আব্দুল মতিনের কন্যা।
সূত্রে জানা যায়, আটককৃত রাখা বেগম তার স্বামী ছাদক আলী হত্যা মামলার প্রধান আসামী। এমনকি একাধিক তদন্তেও বেড়িয়ে এসেছিল স্বামীকে হত্যার চাঞ্চলক্যর তথ্য। একপর্যায়ে আটক হওয়ার পর রাখা বেগম তার স্বামীকে হত্যার স্বীকারোক্তি দেয়। দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক ছিল। এদিকে গত সোমবার রাতে গ্রেফতারের পর আবারো আলোচনায় আসে আলোচিত এই রাখা বেগম।
প্রতারনা মামলার বিবরণে প্রকাশ, গত ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে মামলার বাদী সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ইসলামপুরের আব্দুল খালিকের পুত্র মুক্তার হোসেন এর খালা যুক্তরাজ্য প্রবাসী শেখ সুবেরা খাতুন, স্বামী সৈয়দ শহিদুর রহমান ওরপে শহিদ আলী, সাং উমপুর, পোষ্টঃ বাজার সৈয়দপুর, উপজেলা নবীগঞ্জ, জেলা হবিগঞ্জ। গত ২৫/০৪/২০০৭ ইং তারিখে সুবেরা খাতুন দেশের বাড়ীতে অবস্থানকালে উক্ত প্রতারনা মামলার প্রধান আসামী সৈয়দা রাখা বেগম তার স্বামী ছাদক আলী, শফিক আলী, আলী হোসেন, সুর্যবান সর্ব জেলা সিলেট এর বাসিন্দা মামলার বাদী মুক্তার হোসেনের খালা শেখ সুবের খাতুনের বাড়ীতে গিয়ে তারা সিলেটী গ্রুপ এন্ড কোম্পানী নামীয় একটি কোম্পানী গঠন করেছেন বলে প্রচার করে। উক্ত কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে আসামী ছাদক আলী, সৈয়দা রাখা বেগম ও শফিক আলী দায়িত্বে রয়েছেন বলে প্রচার করে তাদের কোম্পানীতে আরো ৩ জন শেয়ার হোল্ডার প্রয়োজনের কথা বলে মামলার বাদী মুক্তার হোসেন ও তাঁর খালা শেখ সুবেরা খাতুন তাঁর স্বামী সৈয়দ শহিদুর রহমান ওরপে শহিদ আলী কে বুঝিয়ে শুনিয়ে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা হিসাবে দুটি শেয়ারে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা নগদ অথবা কিস্তিতে পরিশোধের জন্য সম্মত করায়। এবং উক্ত টাকা কিস্তিতে এবং নগদে পরিশোধ হওয়ার পর ৫ তলা বিশিষ্ট ২ টি রেডি প্লাট বাড়ী যাহার নির্মাণের পর মূল্য দাড়াবে ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। এই রকম লোভনীয় অফার দেখিয়ে বাদীর খালা শেখ সুবেরা খাতুনকে বশে এনে বিভিন্ন কিস্তিতে ৮৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ৬৫ টাকা আদায় করে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক প্লাট বাড়ী বুঝিয়ে না দিয়ে টাকার পরিশোধের বিষয় অস্বীকার করলে মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট সিলেট আদালতে সৈয়দা রাখা বেগম, সাবেক আলী, শফিক আলী, আলী হোসেন, সুর্যবান সহ ৫জনকে আসামী করে ৮৩,৩৯,০৬৫ (তিরাশি লক্ষ উন চল্লিশ হাজার পয়ষট্টি) টাকার প্রতারনা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে প্রধান আসামী সৈয়দা রাখা বেগম পলাতক ছিলেন। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই লোভি রাখা বেগম তার স্বামী ছাদক আলীকে হত্যা করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত দালান কোটা নিজের হস্তগত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। এ ঘটনায় ছাদক আলীর ভাই শফিক আলী বাদী হয়ে রাখা বেগমকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।