চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে পুলিশের বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালিয়ে একাধিক মাদক মামলার আসামিসহ ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা বড়িসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। পরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ জেলার মাদক ব্যবসায়ীরা কোনো প্রকার ছাড় পাবেন না। মাদকবিরোধী এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে পুলিশ।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খানের নেতৃত্বে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩০ বোতল ফেনসিডিল, ২০ পিস ইয়াবাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের জোয়ার্দ্দারপাড়ার মুনতাজ শেখের ছেলে বাবুল হোসেন বাবন (৩০), ফার্মপাড়ার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে রবিউল হোসেন মোল্লা (৩৫), দৌলতদিয়াড় দক্ষিণপাড়ার মৃত পুটে মিস্ত্রির ছেলে হেলাল উদ্দীন (১৮), মৃত সুবাদ আলীর ছেলে দুদু ম-ল, হাজরাহাটির ম-লপাড়ার মকবুল হোসেন মোল্লার ছেলে কামরুল ইসলাম (৩৫), কৃষ্ণপুর বোয়ালমারীপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে আবু বক্কর (৪৫), বোয়ালমারী গ্রামের মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে তাইজেল ম-ল (৫৫), কবিখালি গ্রামের মৃত শফি উদ্দীনের ছেলে লাল্টু ম-ল (৩৫), মৃত কালাচান ব্যাপারীর ছেলে বিমান ব্যাপারী (৪৮) ও মধ্যের চর গ্রামের রহিম মালতের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩০)।
এদিকে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের জোয়াদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০), আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের আইজাল আলীর ছেলে বাপ্পি (২৮), একই গ্রামের লালু মিয়ার ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০), ক্যানেলপাড়ার হাবিবের স্ত্রী মাধব ম-লের মেয়ে তারা বেগম (২৫), স্টেশনপাড়ার মৃত চান্দ আলীর মেয়ে তারা খাতুন (২২), রেজাউল কালার স্ত্রী মুন্নি বেগম (৪০), আব্দুল আজিজের ছেলে রেজাউল কালা (৫০), নওদাবন্ডবিল গ্রামের মওলা বক্সের ছেলে কামাল হোসেন (৩৫), বেলগাছী ইউনিয়নের ডামোশ গ্রামের হবিবার মালিথার ছেলে মিজানুর রহমান মিজু (৪০), উপজেলার জামজামি ইউনিয়নের পাঁচলিয়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে মোক্তার হোসেন (৩৫), উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের ঘোলদাড়ি পাইকপাড়া গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মানিচ আলী (৫০), আইলহাস গ্রামের আজিজুর রহমান খন্দকারের ছেলে রুহুল আমিন (৪০), কোলবাগুন্দা গ্রামের মৃত গনজের আলীর ছেলে জামাল বাউল (৫০), কাতলী সোনাতনপুর গ্রামের বাবর আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৫০), খাসকররা ইউনিয়নের খাসকররা গ্রামের মৃত আনসার মোল্লার ছেলে ইউনুস মোল্লা (৬০), মৃত আরজান আলীর ছেলে আশা হক (৪০), তালুককররা গ্রামের মৃত মকছেদ আলীর ছেলে মইনুদ্দিন (৫৫) ও উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের ভালাইপুর গ্রামের ভালাইপুর মোড়ের মৃত সাহেব আলীর ছেলে নওশাদ আলী (৫০)।
এ ছাড়াও দামুড়হুদা থানার পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। দামুড়হুদা থানা এলাকার গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন জগন্নাথপুর গ্রামের মক্কার মিয়ার ছেলে আব্দুল লতিফ (৪০), বোয়ালমারী গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আলমগীর (৩৩), চিৎলা গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে মতিয়ার রহমান মতি (৪৫), তরিকুল ইসলামের স্ত্রী আখিতারা খাতুন (৩০), জয়নগর গ্রামের কলিম উদ্দীন কালুর ছেলে সেলিম (৩৮), দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামরে মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে আকছেদ (৪০), শাহা আলমের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (৩০), কার্পাসডাঙ্গার ঝড়– ম-লের ছেলে আব্দুল মোমিন (৫০), মৃত আব্দুল ম-লের ছেলে মোমিন (৫০) ও একই এলাকার সন্তোষ অধিকারীর ছেলে রবিন অধিকারী (৫১)।
পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিরা সবাই একাধিক মাদক মামলার আসামি। তা ছাড়া সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়েও অনেকে আবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা ও দামুড়হুদা থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আটকের পর তাঁদের নিকট থেকে বেশ কিছু মাদক উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে গতকালই তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিল।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা ও দামুড়হুদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে পৃথক পৃথক মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকদ্রব্যসহ তাঁদের আটক করা হয়। এ সময় তাঁরা আরও বলেন, পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, এসব মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়ে পুনরায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। বাকিরাও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মাদকের সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবেন না উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।