ঝিনাইদহে আ.লীগের দুই নেতার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলা
নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহ অফিস:আওয়ামী লীগের দুই নেতার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর এলাকায় বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাত ৯টা ও রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় হাটগোপালপুর বাজারের ৭টি দোকান ও হাটগোপালপুর, ছয়াল ও তিওরদা গ্রামে উভয়পক্ষের অনন্ত ২৫টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় আনোয়ার হোসেন নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়িতে। দমকল বাহিনী খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার বর্তমান চেয়ারম্যান নিজামুল গনি লিটু ও সাবেক চেয়ারম্যান বিকাশ বিশ্বাসের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার রাতে হাটগোপালপুর বাজারে লিটু চেয়ারম্যানের সমর্থক নজরুল, মনিরুল, মিল্টন ডাক্তার, ইউসুফ, খায়রুল, ফারুক ও বাদশার দোকানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এরপর ঝিনাইদহ সদর থানা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক তোতা মিয়া, জেলা পরিষদের কাউন্সিলর ইমাজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, কামাল, শমসের ও সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে প্রতিপক্ষ বিকাশ বিশ্বাসের লোকজন। অন্যদিকে রোববার সকালে লিটু চেয়রম্যানের সমর্থকরা তিওরদা গ্রামে হামলা চালিয়ে বিকাশ বিশ্বাসের সমর্থক নুর ইসলাম, আব্দুল মজিদ, আরব আলী ও জহিরসহ প্রায় ১৫/২০ জনের বাড়ি ভাঙচুর করে। এতে নগদ টাকা, সোনার গহনা ও আসবাবপত্রসহ উভয়পক্ষের লাখ লাখ টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। চেয়ারম্যান নিজামুল গনি লিটু অভিযোগ করেন তার সমর্থক আনোয়ারের বাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। লুট করা হয় ৬টি গরু। অন্যদিকে সাবেক চেয়ারম্যান বিকাশ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, বিরোধ মিমাংসার প্রস্তাব দিয়ে লিটু গ্রুপের লোকজন তার সমর্থবদের উপর হামলা চালায়। এতে হাটগোপালপুরের মিন্টুকে ভেলা মেরে আহত করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন রোববার সকালের দিকে ছয়াল ও তিওরদা গ্রামে তার সমর্থকদের ৫০ জনের বাড়ি ভাংচুর করে লিটুর সমর্থকরা। তারা আমার রাইচ মিলে হামলা চালিয়ে সামনে থাকা নৌকা ভাংচুর করে। হাটগোপালপুর, তিওরদা ও ছয়াল গ্রামে পাল্টাপাল্টি ভাংচুর করা হলেও ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান খান জানান, লিটু ও বিকাশ বিশ্বাস ভাংচুর লুটপাটের যে অভিযোগ করেছে তা সঠিক নয়। শনিবার রাতে তারা দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়েছিল মাত্র। কোন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঝিনাইদহের সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের বাইরে থাকা চেয়ারম্যান কবির হোসেনের সমর্থকদের চারটি মটরসাইকেল ভাংচুর করেছে আওয়ামীলীগের অপর গ্রুপ। এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। নলডাঙ্গা পুলিশ ফাড়ির তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রায়ই হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। নলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, শনিবার বিকালে আমি পরিষদের অবস্থান করছিলাম। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ঝন্টুর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন এসে হামলা করে। এ সময় আমার সহকর্মীদের চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। আওয়ামী লীগ নেতা ঝন্টু বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। আমি হামলার সাথে জড়িত নয়। ওই সময় আমি বিষয়খালী বাজারে অবস্থান করছিলাম।