নিউজ ডেস্ক:
মাঝে দীর্ঘ ১৬ বছরের ব্যবধান। জন্ম দিয়েও মেয়েকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন মা রেবেকা রাড। সদ্যোজাতকে তুলে দেওয়া হয় পালক বাবা-মায়ের হাতে। সেখানেই বেড়ে ওঠে সে। বয়স যখন ষোলো, ফের জন্মদাত্রী মায়ের সান্নিধ্যে আসে মেয়ে সাভান্না লেকি। কিন্তু মধুরেন সমাপয়েৎ নয়। বরং নানা ভাবে অত্যাচারের শিকার হতে হয় তাকে।
গত জুলাইতে সাভান্নার নিরুদ্দেশ হওয়ার খবর সামনে আসে। তদন্তে নেমে পুলিশের সামনে আসে নির্মম এক সত্য।
জানা যায়, নিজের মেয়েকে মেরে পুড়িয়ে মেরেছেন তার মা রেবেকা। ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার মিসৌরিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনা কোনও অংশেই একটি ক্রাইম থ্রিলারের থেকে কম নয়। জন্মের পর মেয়ে সাভান্নাকে মিনেসোটার এক দম্পতির হাতে তুলে দেন রেবেকা। গত বছর ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। পালিতা মায়ের নতুন বয়ফ্রেন্ড মেনে নিতে পারেনি সাভান্নাকে। ফলে ফের তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু এবার সাভান্নাকে আশ্রয় দেন তার জন্মদাত্রী মা রেবেকা।
চলতি বছর জুন মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়ের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে রেবেকা জানান তারা খুব সুখেই আছেন। একসঙ্গে নতুন ব্যবসাও শুরু করেছেন।
কিন্তু রেবেকার প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড জানিয়েছেন, সাভান্নাকে নানাভাবে অত্যাচার করা হত। তাকে বাড়ির বাইরে একটি পরিত্যক্ত ঘরের মধ্যে শুতে দেওয়া হত। ঘরে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। প্রতিবাদ করলে বেধড়ক মারধর করা হত। একবার তার হাতও কেটে দেন রেবেকা। শুধু তাই নয়, নিয়মিত ক্ষতস্থানে নুন দিয়ে তার উপর অত্যাচার চালাতেন তিনি। ১৮ জুলাই রেবেকার বাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে দমকলে খবর দেন প্রতিবেশীরা।
দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, মেয়ে অসুস্থ বলে তাদের বাড়িতেই ঢুকতেই দেননি রেবেকা। এর কয়েক দিন পর পুলিশের কাছে সাভান্নার নিরুদ্দেশ হওয়ার খবর জানান রেবেকা। সন্দেহ দানা বাধে তখনই। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ৮১ একর জমি রয়েছে রেবেকার। এখানেই নতুন বয়ফ্রেন্ড রবার্ট পিটকে নিয়ে থাকতেন তিনি। সাভান্নার নিরুদ্দেশ হওয়ার খবর পেয়ে বাড়ির তল্লাশি নিতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে রেবেকা ও তার বয়ফ্রেন্ড দু’জনেই সেখান থেকে ১০০ মাইল দূরে সামারসভিলেতে বিয়ে করতে গিয়েছেন। বাড়ির মধ্যে থেকে শুকনো পাতার তলায় লুকনো ছাই উদ্ধার করে পুলিশ।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, সাভান্নাকে খুব উচ্চ তাপমাত্রায় পোড়ানো হয়েছিল। তাকে হত্যা করার সময় রাসায়নিকেরও ব্যবহার হয়েছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। খুনের অভিযোগে রেবেকা ও তার বয়ফ্রেন্ডকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় তাঁরা নিজেদের অপরাধ স্বীকারও করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।