ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য-সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গ গ্রাফিতি (ঘৃণা স্তম্ভ হিসেবেও পরিচিত) গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন সিটি করপোরেশন কর্মীরা।
এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে টিএসসি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গভীর রাতে টিএসসি-সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ব্যঙ্গাত্মক গ্রাফিতি ক্রেন নিয়ে মুছতে আসে সিটি করপোরেশনের কিছু লোক। শেখ হাসিনার গ্রাফিতির মাথা পর্যন্ত মুছে ফেললেও শেখ মুজিবের পুরোটাই মুছে ফেলা হয়েছে। শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দিলে তারা এটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটা ছিল মূলত ঘৃণা স্তম্ভ। এটি জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি। আমরা এটি দেখে প্রক্টরকে কল করলে প্রক্টর এসে জানান, তাকে গোয়েন্দা সংস্থা কল করেছেন শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ছবি মুছে দেওয়ার জন্য। পরে প্রক্টর এস্টেট অফিসকে জানালে অফিস সিটি করপোরেশন ও মেট্রো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এটি মুছে ফেলার উদ্যোগ নেয়। যা শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে সম্ভব হয়নি।
এরপর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং একটি অফিশিয়াল বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশের কথা জানান। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার মুছে যাওয়া অংশে শিক্ষার্থীদের শেখ হাসিনার বিকৃত ছবি আঁকতে বলেন এবং ঘৃণা স্তম্ভকে অফিশিয়ালি স্বীকৃতি দেবেন বলে উল্লেখ করেন।
পরবর্তী সময় শেখ হাসিনার মুছে যাওয়া গ্রাফিতির অংশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনার আরেকটি ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন আঁকেন।
শেখ হাসিনার পতনের আগেই ৩ আগস্ট মেট্রোরেলের পিলারে থাকা শেখ হাসিনার এই গ্রাফিতিতে কালি মেখে দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সেদিন ও পরদিন (৩ ও ৪ আগস্ট) বিক্ষোভ চলাকালীন প্রায় সারাদিনই এর মধ্যে জুতা নিক্ষেপ করতে থাকে আপামর জনতা। ফলে এটি জুলাই বিপ্লবের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আবির্ভূত হয়।