চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড়ে পাষ- স্বামী আবু হোসেনের কান্ড
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড় কোরিয়াপাড়ায় লাবনী নামের (১৬) এক গৃহবধূর ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার পাষ- স্বামী আবু হোসেনের (৬৫) বিরুদ্ধে। এ সময় ঘরে ঘুমিয়ে থাকা লাবনীর মা মাহিমা খাতুন কোনো রকমে ঘর থেকে বের হতে পারলেও আগুনে পুড়ে যায় ঘরের আসবাবসহ ৯টি ছাগল। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে লাবনীর ঘরে এ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় লাবনীর মা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে দুই লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দৌলাতদিয়াড় কোরিয়া গোডাউন এলাকার পিছনে মাঠ পাড়ার সাইফুল ইসলাম লালার স্ত্রী মাহিমা খাতুন ও মেয়ে লাবনীকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে টিনের ছাপরা ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন একই এলাকার দক্ষিণপাড়ার আবু হোসেন। এ সময় ঘরের ভেতর লাবনীর মা ও তাঁদের পোষা ৯টি ছাগল ছিল। ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে লাবনীর ভাই টিন ভেঙে মা মহিমা খাতুনকে বের করতে পারলেও বাঁচাতে পারেনি ৯টি ছাগলসহ পুরো ঘরটি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সদর থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। রাস্তা সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই পুরো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনায় লাবনীর মা বাদী হয়ে তাঁর মেয়ের স্বামী আবু হোসেনের নামে থানায় মামলা করেছেন। আবু হোসেন দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণ পাড়ার মৃত মোহাম্মদ ম-লের ছেলে।
এ দিকে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লাবনীর জীবনের করুণ কাহিনি। দুই বছর আগে লাবনী দৌলাতদিয়াড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। সে সময় আবু হোসেনের লালসার শিকার হয় কিশোরী লাবনী।
লাবনীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, দুই বছর আগে দৌলাতদিয়াড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী লাবনীকে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণ করেন আবু হোসেন। ওই ঘটনার পর লাবনীর পরিবার ধর্ষক আবু হোসেনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণের মামলা করেন। ওই মামলায় প্রায় তিন মাস জেলেও থাকতে হয় আবু হোসেনকে। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে জেলখাটার ভয়ে লাবনীর নামে ১০ কাঠা জমি লিখে দিয়ে তাকে বিয়ে করেন আবু হোসেন এবং সে সময় ওই মামলায় থেকে মুক্তি পান তিনি। বর্তমানে ওই ১০ কাঠা জমিতেই টিনের ছাপরা তুলে বসবাস করেন লাবনী ও তার মা।
এ দিকে লাবনীর নামে লিখে দেওয়া ১০ কাঠা জমি ফেরত নিতে লাবনী ও তার পরিবারের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন ধর্ষক আবু হোসেন। বিভিন্ন সময়ে লোকজন দিয়ে হুমকি-ধামকিসহ লাবনী ও লাবনীর পরিবারের সদস্যদের নামে একে একে দেওয়া হয় ১৫টি মামলা। একপর্যায়ে আবু হোসেন গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে লাবনীদের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন লাবনীর মা।
এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, দৌলাতদিয়াড় কোরিয়া পাড়ায় একটি ছাপরা ঘর, আসবাবসহ ঘরে থাকা ৯টি ছাগল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় মহিমা খাতুন নামের একজন নারী বাদী হয়ে তাঁর জামাই আবু হোসেনকে সন্দেহমূলক আসামি করে মামলা করেছেন। অভিযুক্ত আসামিকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।