নিজস্ব প্রতিদেক, ঝিনাইদহঃ ‘আজ আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি, আজ ভেবে কষ্ট হয় আমি আমার মেয়েদের কতই না কষ্ট করে মানুষ করেছি। স্বামী মারা যাবার পর আমি জুট মিলে, তুলার মিলে, গ্রীস কারখানায় কাজ করে লেখাপড়া করিয়েছি, দু’বেলা দু’মুঠো খাইয়েছি। লক্ষ লক্ষ টাকা আমি জমি বেঁচে ওদের দিয়েছি। ভেবেছি ওরা ভাল থাক, সবই তো ওদের। পোষ্ট অফিসে যে ৭ লক্ষ টাকা রেখেছি তার নমিনিও দুই মেয়ে। আজ ওরা আমার নামে মিথ্যা গহনা চুরির অভিযোগ করল, কোর্টে মামলা দিল, আমাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিল। আমার চরিত্র নিয়ে কুৎসা রটাতেও দ্বিধা বোধ করল না। আমাকে যে ভাবে আমার পেটের সন্তান সমাজে লাঞ্ছিত করল তাতে আমার বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুও শ্রেয়’। কান্নাজড়িত কন্ঠে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলছিলেন মিরা রানী নামের এক নারী। জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার মৃত প্রদীপ বিশ্বাসের স্ত্রী মিরা রানী। ২০১৫ সালে তার স্বামী মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্টে তার দুই মেয়েকে মানুষ করেছে। ছোট মেয়েকে অনেক টাকা খরচ করে বিয়ে দিয়েছেন। স্বামীর ওয়ারেশ সুত্রে পাওয়া ২৫ শতক জমির মধ্যে বিক্রি করে মেয়েদের দিয়েছেন। এখন মাত্র সাড়ে ৮ শতক জমি আছে তার। স¤প্রতি ৬ শতক জমি বিক্রি করে ৭ লাখ টাকা পোষ্ট অফিসে রেখেছেন তিনি। তার নমিনিও করেছেন তার দুই মেয়েকে। তবে দুই মেয়ে পুজা বিশ্বাস ও জবা বিশ্বাস, মেয়ে জামাই বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, সুদেব বিশ্বাস, ভাসুর রমেন বিশ্বাস, দিলিপ বিশ্বাস, দেবর স্বপন বিশ্বাস, ভাসুরের ছেলে বিধান বিশ্বাস, রাজন বিশ্বাস মিলে জমি ও টাকা আত্মসাৎ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি মেয়েরা তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে আদালতে মিথ্যা চুরি মামলা দিয়েছে। দুই মেয়ে ও ভাসুর-দেবরদের হাত থেকে রক্ষা ও মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগি মিরা রানী। সংবাদ সম্মেলনে মিরা রানীর বোন ঝর্ণা সরকার, ভাগ্নে অমিত সরকার ও অরূপ সরকার উপস্থিত ছিলেন।