অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, কখন বাংলাদেশে নির্বাচন হবে তার কোনো টাইমফ্রেম তার কাছে নেই। তিনি বলেছেন, সংস্কার বিষয়ক কমিশনের সুপারিশের পর তিনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে আয়োজিত টাইমস ‘ক্লাইমেট ফরোয়ার্ড’ সামিটে ড. ইউনূস ছিলেন অন্যতম বক্তা। সেখানে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে সংস্কার সুপারিশ দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তা হাতে পাওয়ার পর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
ড. ইউনূস এও জানিয়েছেন, তিনি নিজে নির্বাচন করবেন না। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিকল্পনা আছে কি-না তার? উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আমাকে দেখে কি এমন মনে হয় যে, আমি নির্বাচন করবো?
এসময় গণপিটুনি বা মব জাস্টিস সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আপনারা বাইরে থেকে ‘অতিরঞ্জিত’ খবর পাচ্ছেন। যা ঘটছে সেটাকে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েবলেন, আপনারা নিজ চোখে যেটা দেখবেন সেটাই রিপোর্ট করেন।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে সীমাবদ্ধ করার জন্য বিশ্বব্যাপী হয়েছে প্যারিস চুক্তি। কিন্তু এই চুক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ করবে না, যতক্ষণ বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে বিশ্ব লেগে থাকবে। এই ব্যবস্থার লক্ষ্যই হলো সর্বোচ্চ লাভ করা। ক্ষুদ্র একটি গ্রুপের লক্ষ্য থাকে সম্পদ অর্জন। একই সঙ্গে এই ব্যবস্থা ব্যাপক মাত্রায় বর্জ্য তৈরি করে।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি তা এই গ্রহের ধ্বংসের মূল। মানবজাতি সৃষ্টি করেছে নিজেকে ধ্বংসকারী এক সভ্যতা। চুক্তির ফলে কী পরিবর্তন হলো তা কোনো বিষয় নয়। এটা কোনো পার্থক্য তৈরি করবে না যতক্ষণ বিশ্বের ব্যবস্থাগুলোকে নতুন করে ডিজাইন না করা হয়। ধনী দেশগুলো জলবায়ুর যে ক্ষতি করছে তার দায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাঁধে চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, আপনারা যেসব ধ্বংসাত্মক কাজ করছেন তার বোঝা কেন আমরা কাঁধে নিয়ে নেবো? আপনারা হলেন এসবের কারণ। আর আমরা তার ফল ভোগ করছি। তিনি বলেন, ব্যক্তিবিশেষকেও কম বর্জ্য তৈরির দায়িত্ব নিতে হবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানি কমাতে হবে।