আলমডাঙ্গায় পরকীয়ার জেরে পুলিশ কনস্টেবলের ছুরিকাঘাত
নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার মাদ্রাসাপাড়ায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ কনস্টেবল জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি শেফালী অধিকারী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় স্ত্রী ফাল্গুনী ও শ্যালক আনন্দ অধিকারী গুরতর অধিকারী আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানায়, জামাই অসীম ভট্টাচার্যের মৃত আপন বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে এ নির্মম হত্যাকা- ঘটে। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, সাত বছর আগে ফাল্গুনীর সঙ্গে খুলনার দৌলতপুর এলাকার অসীম কুমার ভট্টাচার্যের বিয়ে হয়। অসীম চুয়াডাঙ্গা সিআইডিতে যোগদানের পর স্ত্রী ফাল্গুনী ও ছয় বছর বয়সী একমাত্র ছেলেসন্তান আরাধ্য ভট্টাচার্যকে নিয়ে আলমডাঙ্গা শহরের কলেজপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এদিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিলে শুক্রবার রাতে অসীম স্ত্রী ফাল্গুনীকে মারধর করেন। ফাল্গুনী ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। শুক্রবার রাত একটার দিকে অসীম শ্বশুরবাড়ির দরজায় গিয়ে ডাক দিলে স্ত্রী ফাল্গুনী দরজা খুলে দেন এবং অসীম তাঁর হাতের ছুরি দিয়ে ফাল্গুনীর বুক ও তলপেটে আঘাত করেন। ফাল্গুনীর চিৎকারে মা শেফালি এগিয়ে এলে তাঁকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর ছুরিকাঘাতে জখম হন শ্যালক আনন্দ। এ ঘটনায় শ্বশুর সদানন্দও আহত হয়েছেন। আহত ফাল্গুনী ও আনন্দকে গুরতর অবস্থায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সদানন্দকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আলমডাঙ্গা থানার তদন্তকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরে অসীম-ফাল্গুনী দম্পতির মধ্যে প্রায়ই বিরোধ তৈরি হতো। শুক্রবার রাতে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।আহত আনন্দ অধিকারী বলেন, ‘দিদি আমাদের বাড়িতে আসার কিছুক্ষণ পরই জামাইবাবু আমাদের বাড়িতে আসেন। দিদি গেট খুলতেই তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন জামাইবাবু। এ সময় মা ও আমি ছুটে গিয়ে তাঁকে থামানোর চেষ্টা করলে তিনি আমাদেরও এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আমার মায়ের।’অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ (সদর সার্কেল) জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ভোরেই নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত ফাল্গুনী ও আনন্দকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন কনস্টেবল অসীম ভট্টাচার্য।চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, ‘ঘটনাটি আমাদের কাছে একটু জটিল মনে হচ্ছে। তবে এটি পরিষ্কার যে ওই দম্পতির মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল। অসীমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকা-ের আসল ঘটনা জানা যাবে।’