নিউজ ডেস্ক:
এক নতুন সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে কার্ডিওভাসকুলার অ্যাক্টিভিটির সময় নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া হয় সম্পূর্ণ আলাদা। এবং এই কারণেই কোনো অসুস্থতা নির্ধারণ হয়ে গেলে তার চিকিৎসা হবে লিঙ্গ ভিত্তিক। অর্থাৎ নারীর জন্য এক রকম চিকিৎসা আর পুরুষের জন্য অন্যরকম।
মস্তিষ্কের যে অংশ স্ট্রেস, হার্টরেট কিংবা রক্ত চাপের মতো বডি ফাংশানস নিয়ন্ত্রণ করে, নারী এবং পুরুষের ক্ষেত্রে সেই বিশেষ অংশ একই কাজের প্রেক্ষিতে আলাদা-আলাদাভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে। আকলা (UCLA) স্কুল অফ নার্সিং-এর করা এক সমীক্ষায় এই তথ্য জানা গেছে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে যা বোঝা যাচ্ছে তা হল কার্ডিওভাসকুলার ব্যাধি আলাদা-আলাদাভাবে নারী এবং পুরুষের মধ্যে কাজ করবে এবং ফলে সেই ব্যাধির নিরাময় পদ্ধতিও হবে আলাদা।
পল মেসি-র নেতৃত্বে এই সমীক্ষার সময় হ্যান্ড-গ্রিপ এক্সারসাইজ করানো হয়েছিল ভলান্টিয়ারদের এবং সেই সময় তাঁদের ফাংশনাল এমআরআই করা হয়েছিল। এই ধরনের ব্যায়ামের সময় মস্তিষ্কের কাছ থেকে সিগনাল পেয়ে দেহের রক্ত চাপ এবং হার্টরেট বৃদ্ধি পায়। এফএমআরআই পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ মাপার জন্য সাধারণত ব্যবহার করা হয় ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং টেকনোলজি। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন ইনসুলার কর্টেক্স নামের মস্তিষ্কের অংশটি নারী এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরনের অ্যাক্টিভিটি প্রদর্শন করে। হ্যান্ড গ্রিপ এক্সারসাইজে মেয়েদের ক্ষেত্রে ফ্রন্ট ইনসুলার জাইরাস -এর ডান দিকে বেশি অ্যাক্টিভেটেড হয় পুরুষদের তুলনায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভিটি বেশি হয় বাঁ দিকে।
মেয়েদের রেস্টিং হার্টরেট পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি হয়। এর আগে পল মেসি এবং তাঁর গবেষক দলের প্রতিনিধিরা মস্তিষ্কের এই অঞ্চলের নিরীক্ষা করেছিলেন ‘ভালসালভা ম্যানুভার ’ ব্যবহার করে। এই নিরীক্ষায় রক্ত চাপের যে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় তা নিয়ন্ত্রণ করে সেই নার্ভাস সিস্টেম যার নাম ‘সিমপ্যাথেটিক ’ নার্ভাস সিস্টেম। হ্যান্ড গ্রিপ এক্সারসাইজের ক্ষেত্রে যে নার্ভাস সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে তার নাম ‘প্যারাসিমপ্যাথেটিক ’ নার্ভাস সিস্টেম। দেখা গিয়েছে ইনসুলার কর্টেক্স-এর ডান দিকটা বেশি সিমপ্যাথেটিক এবং বাঁ দিকটা বেশি প্যারাসিমপ্যাথেটিক।
দুই পরীক্ষা থেকেই যে তথ্য বেরিয়ে আসছে তা হল সুস্থ-সবল নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্ক একই ক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেয় সম্পূর্ণ বিপরীত। এই সমীক্ষার ফল যে নানা মহলে গৃহীত হবে, তা জোর দিয়ে বলা যায় না। তবে নারীবাদীদের একাংশ এতে আপত্তি করেছেন।
সূত্র: এই সময়