সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া খবর, যেখানে বলা হয়েছে যে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় লালমনিরহাটে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, সেটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
২৭ নভেম্বর ‘BDMilitary/BDOSINT’ নামের একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয় যে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী লালমনিরহাটে ৭০০ একর জমি নিয়ে একটি নতুন বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। সেখানে ৭০টি যুদ্ধবিমান রাখার ব্যবস্থা থাকবে এবং এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো বিচ্ছিন্ন করার মতো কৌশলগত অবস্থানে থাকবে।
পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, বিমানঘাঁটি তিনটি বিভাগে ভাগ করা হবে—কমব্যাট অপারেশনস বিভাগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত বিভাগ (এমআরও), এবং একটি মহাকাশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, দাবিটির সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ২৭ নভেম্বর টাঙ্গাইলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বার্ষিক মহড়া ‘এক্সারসাইজ ফ্লাশ পয়েন্ট ২০২৪’-এর ওপর ভিত্তি করে এমন গুজব ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে:
– বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মহড়া নিয়ে প্রকাশিত তথ্য বা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবির কোনো উল্লেখ নেই।
– মহড়ার দিন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের বক্তব্যের সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওতেও এমন কোনো পরিকল্পনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
– প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ আইএসপিআর স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, চীনের সহায়তায় বিমানঘাঁটি নির্মাণের দাবি সম্পূর্ণ ভুয়া। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের কোনো প্রকল্প বা আলোচনাই হয়নি।রিউমর স্ক্যানার স্থানীয় সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে জানায়, লালমনিরহাটে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি পুরোনো বিমানঘাঁটি রয়েছে। তবে সেখানে বর্তমানে কোনো কার্যক্রম নেই এবং নতুন করে বিমানঘাঁটি চালুর বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
চীনের সহায়তায় লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি নির্মাণের দাবি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো এই গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।