নিউজ ডেস্ক:
রংপুরের পীরগঞ্জের কলাবাগানে চালকের ভুলে সিমেন্ট ভর্তি ট্রাক উল্টে শিশু ও দুই নারীসহ নিহত হয়েছে ১৬ জন। আহত হয়েছে ৮ জন। এরা সবাই ঈদ উদযাপনের জন্য গাজিপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, ঘুমন্ত চোখে চালকের বদলে হেলপারের গাড়ি চালানোর কারনেই এই দুর্ঘটনা।
রংপুর হাইওয়ে পুলিশের এএসপি ধীরেন্দ্র নাথ চন্দ্র জানান, গাজীপুর থেকে রানা এন্টারপ্রাইজের একটি ট্রাক( রংপুর-ট-১১-০৩২৮) ২৯০ টি ফ্রেস সিমেন্ট নিয়ে তার ওপর প্রায় ৪০ জন যাত্রী নিয়ে রাত রওয়ানা দেয়। ভোড় সাড়ে ৫ টার দিকে কলাবাগান এলাকায় চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকায় গাড়িটে মহাসড়কের পাশে উল্টে যায়। এতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে ১১ জন এবং পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৫ জন মারা যায়। গুরুতর আহত ৮ জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, এরা সবাই পোশাক শ্রমিক। তাদের সবার বাড়ি লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলায়।
তিনি বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা চালায়। এ ঘটনায় ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ২ ঘন্টা পর স্বাভাবিক হয়। তিনি বলেন লাশগুলো এখন বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আছে। তিনি আরও জানান, হেলপার ও চালক পলাতক আছে। ট্রাকের মালিকদের ট্রেস করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া মৃতদের নাম হচ্ছে লালমনিরহাটের চাপারহাটের জমিলা খাতুনের স্বামী ঝন্টু মিয়া, তার ৯ বছরের কন্যা সুবর্না, মোহাম্মদ আলীর পুত্র কোহিনুর ইসলাম বাবু(৩৬), সুজন(২৩), আদিতমারির মহিশখোচা এলাকার আব্দুল খালেকের পুত্র রবিউল ইসলাম(২২), বড়াআবাড়ির আইয়ুব আলীর পুত্র আজিজুর রহমান(৩৪), কালিগঞ্জের লতাবর এলাকার আলমগীর(৩৫), বাজিতপুরের জাহিদুল ইসলাম, ছাপারিহাটের একাববর আলীর পুত্র খলিল মিয়া(৩৫), কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির নাসিদা আখতার ঝিনাইদহের মৈলকুপার নিজগ্রামের আনিছুজ্জামান, ময়মন সিংহের ভালুকার বালুজার এলাকার সিরাজ উদ্দিনের পুত্র জসিম উদ্দিন। বাকীদের নাম এখনও পাওয়া যায় নি।
বেঁচে যাওয়ারা জানিয়েছেন নিহতরা গাজিপুরের ডিজিটাল স্টাইল ক্যাপসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানা ও কৃষি কাজের শ্রমিক। তাদের বাড়ি লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ, আদিতমারী ও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি এলাকায়। হতাহতদের পরিবারে এখন শুধুই শোকের মাতম।
এদিকে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানিয়েছেন ঘটনা তদন্তে বিআরটিএ রংপুরের সহকারী পরিচালক আবদুল কুদ্দুসকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া
নিহতদের জন্য ২০ হাজার ও আহতদের জন্য ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে বলেও তিনি জানান।