নিউজ ডেস্ক:
সিনেমার দৌলতে অনেকেই জানেন, শুক্রাণু বিক্রি করা এমন কঠিন কাজ কিছু নয়। শারীরিক ধকল তাতে অনেকটাই লঘু। কিন্তু ডিম্বাণু বিক্রি করা মোটেও সহজসাধ্য বিষয় নয়। তা যেমন সময়স্বাপেক্ষ, তেমনই সম্ভাবনা আছে মারাত্মক অসুস্থতার। এমনকি মৃত্যু হওয়ায় অসম্ভব নয়। তাও ঝুঁকি নিয়েই এ কাজ করছেন ভারতের মহিলারা। যাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিকি ডোনার’।
কিন্তু কেন এই ঝুঁকিবহুল কাজ? উত্তর একটাই, দারিদ্র। স্বামী সামান্য শ্রমিকের কাজ করে, বাড়ির অর্থাভাব মেটাতেই এই পথ নিতে বাধ্য হচ্ছেন কেউ। কেউবা আবার মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাতই ধরছেন এই পথ। কেননা মোটে তিন-চার সপ্তাহের ভিতরেই হাতে আসে মোটা টাকা। আইভিএফ বা গর্ভ ভাড়া দেওয়ার মতোও কাজ নয় এটি। অনেকটাই ঝামেলাহীন, আর তাই গোপনে এই উপার্জনের পথ ধরতে দ্বিধা করছেন না মহিলারা।
কীভাবে সংগৃহীত হয় ডিম্বাণু? প্রথমে সপ্তাহ তিনেক বিশেষ ওষুধ দেওয়া হয় মহিলাদের। তাতে বন্ধ হয়ে যায় তাঁদের ঋতুচক্র। এরপর দেওয়া হয় হরমোন ইঞ্জেকশন। এতে স্ফীত হয় ডিম্বাশয়। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে দেখে নেওয়া হয় ডিম্বাণু জন্ম নিয়েছে কিনা। এরপর ফের দেওয়া হয় হরমোন ইঞ্জেকশন। তারপর ছোট্ট সার্জারি করে বের করে নেওয়া ডিম্বাণু। বিনিময়ে ২৫-৩৫ হাজার টাকা পান ‘নিকি ডোনার’রা। অবশ্য এই দামে ডিম্বাণু পান না গ্রহীতারা। কেননা মাঝে আছে দালাল চক্র। অন্যান্য দেশে যেরকম অনুমতি নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে ডিম্বাণু নেওয়া হয়, এখানে সেরকম হয় না। এই মহিলাদের জোগাড় করেন দালালরা। তাঁরা এর জন্য নেন ৫০-৬০ হাজার টাকা। ডোনাররা যে যতটা দরদাম করতে পারেন, ততটাই প্রাপ্তি হয় তাঁদের।
শারীরিক ঝুঁকি আছে, তাও ভারতের দিল্লি, গুরুগ্রামের বহু মহিলারা এই কাজে ছুটে আসছেন। এমনকি টাকার অঙ্কের দিকে তাকিয়ে ঝুঁকি নিচ্ছেন অবিবাহিত বা কলেজ ছাত্রীরাও। কিডনি ফেলিওর থেকে মৃত্যু হওয়ারও সম্ভাবনা আছে। কিন্তু পেট বড় বালাই। আর তাই সব জেনেশুনেও ডিম্বাণু বিক্রিকেই বিকল্প পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এই ‘নিকি ডোনার’রা। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।