দামুড়হুদার রামনগর থেকে ফেরার পথে ভালাইপুর মোড়ে বিপত্তি : ট্রাকের ধাক্কায়
নিউজ ডেস্ক:দামুড়হুদা রামনগর শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে কুকুরের ধাওয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় শামসুর রহমান শান্তি (৩০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। গতকাল রোববার ভোর ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের ভালাইপুর মোড়ে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শান্তিকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সকাল পৌনে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে, নিহত শান্তির পরিবারের অভিযোগ শ্বশুর বাড়ি লোকের সাথে বিরোধ থাকায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ধারালো অস্ত্রের কোপের আঘাতে মান্তির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামিম কবির। নিহত শামসুর রহমান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের মাখালডাঙ্গা গ্রামের ভেন্নাতলাপাড়ার আশির উদ্দিনের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৭ বছর পূর্বে দামুড়হুদা উপজেলার রামনাগর গ্রামের মসজিদপাড়ার আলিমের মেয়ে জান্নাতুল মুন্নির সাথে শামসুর রহমান শান্তির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই জান্নাতুল বিভিন্ন ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। গত দেড় বছর যাবত বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে কোন যোগাযোগ ছিল না জান্নাতুল মুন্নির। তবে তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ হতো মাঝেমধ্যে। তারা আরো বলেন, জান্নাতুল মুন্নি বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা নিত বলে অভিযোগ করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। গত শনিবার জান্নাতুলের ডাকে শ্বশুর বাড়িতে যায় শামসুর রহমান শান্তি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রোববার ভোর ৫টার দিকে ভালাইপুর মোড়ে একদল কুকুর শামসুর রহমান শান্তিকে ধাওয়া করে। এতে শামসুর রহমান শান্তি মোটরসাইকেল জোরে চালালে ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে। এই সময় রাস্তা ফাঁকা থাকায় ট্রাক চালক ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে গুরুত্বর জখম হয় শান্তি। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সকাল ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে লাশ নিজ বাড়িতে নিলে মাথায় আঘাত দেখে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। তারা অভিযোগ করলে সদর থানা পুলিশ লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়। ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে ময়নাতদন্তকারী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামিম কবির বলেন, তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি এটা হত্যাকা-ের ঘটনা হতে পারে। রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, কুকুরের ধাওয়া খেয়ে মোটরসাইকেল জোরে চালিয়ে ভালাইপুর মোড় ঘোরার সময় চুয়াডাঙ্গাগামী একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে। পরে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে এটি আসলেই কি সড়ক দুর্ঘটনা নাকি হত্যা।