নিউজ ডেস্ক:মেহেরপুরের কলাইডাঙ্গার মাঠের একটি আমবাগানে রানা নামের এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বিকাল আনুমানিক ৪টার দিকে এই হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষক রানা হক (৪০) সদর উপজেলার কলাইডাঙ্গা গ্রামের হিসাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় সাহানুর খাতুন (৩৫) নামের এক মধ্যবয়সী নারীকে আটক করেছে পুলিশ। কী কারণে এই হত্যাকান্ড? সেই রহস্য উৎঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন মেহেরপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম। এলাকাবাসীর অনেকের ভাষ্যমতে পরকীয়ার কারণেই এই হত্যা হতে পারে। কিন্তু পুলিশের হাতে আটক সাহানুর জানায় তাকে জোর করে ধর্ষণ করে রানা। এসময় সে চিৎকার করলে তার ছেলেসহ ছেলের বন্ধুরা ছুটে এসে রানাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে নিহত রানার পিতার দাবি পূর্বশক্রতার কারণে সাহানুর ও তার ছেলের সাঙ্গপাঙ্গরা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে খুন করেছে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, কলাইডাঙ্গা গ্রামের আসাদুলের স্ত্রী সাহানুরের সাথে হিসাব আলীর ছেলে রানা দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিষয়টি শাহানারার ছেলে ইব্রাহিম জেনে যায়। গতকাল শুক্রবার বিকালের দিকে কলাইডাঙ্গা গ্রামের মামুন চৌধুরীর আমবাগানে সাহানুর কৌশলে রানাকে নির্জন বাগানের মধ্যে ডেকে আনে। এসময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ইব্রাহিম, আবু তালেবের ছেলে হেলাল এবং মতিয়ারের ছেলে সোহাগ রানার উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এসময় তাদের এলোপাতাড়ি অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই রানার মৃত্যু হয়। রানার মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের খবরে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত রানার বিকৃত লাশ উদ্ধার করে। পরে এই হত্যাকাÐের সাথে জড়িত আসাদুলের স্ত্রী সাহানুরকে বাড়ি থেকে আটক করে।
নিহতের পিতা অভিযোগ করে বলেন- রানার কোন প্রকার নিজের চাষের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে ফসল চাষ করে আসছিলো। একই গ্রামের সাহানুর মাঠের মধ্যে ভেড়া পালতো। ভেড়া তার ক্ষেতের ফসল নষ্ট করতো। কারণে অনেক বার সাহানুরকে নিষেধ করলেও সাহানুর নিষেধ অগ্রাহ্য করে বরং ফসলে জমিতে ভেড়া দিয়ে অত্যাচার করতো। এনিয়ে বিভিন্ন সময় রানার সাথে সাহানুরের তর্কবিতর্ক হতো। এরই সূত্রধরে সাহানুর ও তার ছেলেসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলে রানাকে নৃশংসভাবে খুন করে বলে জানান।
রানা হত্যাকাÐের সাথে জড়িত সাহানুর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, রানা দীর্ঘদিন যাবত তাকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় গতকাল শুক্রবার বিকালে কলাইডাঙ্গা মাঠের মাধ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণ করলে তারই চিৎকারে ছেলে ও বন্ধুরা রানার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।
মেহেরপুর সদর থানার এসআই আহসান হাবিব জানান, রানা হত্যার দায়ে সাাহানুর খাতুনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে রানাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত থাকবে, কিসের কারণে এই হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটেছে সেই তথ্য বেরিয়ে আসবে।রানা হত্যাকাÐের সাথে জড়িত থাকায় আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। নিহত রানার লাশ বারাদী ক্যাম্পের হেফাজতে রাখা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মেহেরপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, তাকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। গ্রামের এক মহিলার সাথে তার পরকীয়া ছিল। এই কারণে সে খুন হয়ে থাকতে পারে। ওই মহিলাকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যেতে পারে। এ ব্যাপারে নিহত রানার পিতা হিসাব আলী বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা গুলশান পাড়া থেকে দিনে দুপুরে মোটরসাইকেল চুরি!
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের গুলশানপাড়া থেকে দিনে দুপুরে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার বিকালে এ চুরির ঘটনা ঘটে। জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের গুলশানপাড়ার আনোয়ারুল হক মালিক শুক্রবার দুপুরে তার হিরো হোন্ডা পেশন প্লাস লাল রঙের ১২৫ সিসি মোটরসাইকেলটি বাড়ির নীচে রাখে। বিকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখে তার মোটরসাইকেলটি নেই। অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে তিনি বুঝতে পারেন তার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে গিয়েছে। এদিকে, দিনে দুপুরে পৌর শহর থেকে মোটরসাইকেল চুরির হওয়ায় অনেকে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।