নিউজ ডেস্ক:
যদিও ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা, তারপরও বর্তমান পরিস্থিতি বলছে গত দুইদিন বাংলাদেশ ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে রাখলেও তৃতীয় দিন শেষে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের ২৬৫ রানের টার্গেটের জবাবে ইতিমধ্যে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তুলে ফেলেছে সরফকারীরা।
এর থেকেও বড় কথা অস্ট্রেলিয়ার যে দুই ব্যাটসম্যান প্রতিপক্ষের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, সেই ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ এখনও অপরাজিত। আগামীকাল ৭৫ রান নিয়ে ওয়ার্নার এবং ২৫ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামবেন স্মিথ। তবে চতুর্থ দিনের শুরুতেই এই দুই ব্যাটসম্যানকে দ্রুত ফেরাতে পারলে অবশ্য ফলাফল অন্যরকমও হতে পারে।
এদিন, বাংলাদেশের দেওয়া ২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে শুরুটা সতর্কতার সঙ্গে হলেও ২৮ রানের মধ্যে দুই উইকেট তুলে নিয়ে অজি শিবিরের কাঁপন ধরিয়ে দেন সাকিব ও মিরাজ। গত ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও উইকেটের শুরুটা করেন মিরাজ। গত ইনিংসে অজিদের সর্বোচ্চ স্কোরার ম্যাট রেনশকে ব্যাক্তিগত ৫ রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। এর পরের ওভারে বল করতে এসেই তিন নম্বরে নামা উসমান খাজাকে এক রানেই ফিরিয়ে দেন সাকিব। তবে এই পর্যন্তই। পরের গল্পটি শুরু ওয়ার্নারের। পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে দ্রুত অর্ধশতক তুলে নেন এই ওপেনার। যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এর মধ্যে অবশ্য একবার আউটের হাত থেকে বেঁচে গেছেন স্মিথ। স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি, কিন্তু থার্ড আম্পায়ার তাকে নট আউট ঘোষণা দেন। এরপরই যেন প্রাণ ফিরে পায় অস্ট্রেলিয়া। বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন ওয়ার্নার। সফলতাও পেয়েছেন হাতেনাতে। ৭২ বলে ৫০ রান করার পর ওয়ার্নার দিন শেষে ৯৬ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত।
এর আগে, তৃতীয় দিনে দুর্দান্ত শুরুর পরও তামিম-সাকিবের-মুশফিকের উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। মুশফিক-সাব্বির জুটির বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখালেও বেশিদূর যেতে পারেননি তারা। অনেকটা তাসের ঘরের মতোই ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। তাই অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যটাও ২৬৫ রানেই আটকে যায়।
তৃতীয় দিনের শুরুতে নাথান লায়নের ঘূর্ণিতে বিদায় নেন তাইজুল ও ইমরুল। দলের রান যখন ৬১ তখন ব্যক্তিগত ৪ রানে করে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন তাইজুল। এরপর স্কোর বোর্ডে মাত্র ৬ রান যোগ করতেই ওয়ার্নারের তালুবন্দী হন ইমরুল। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ২ রান। এরপর মাঠে নামেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অন্যদিকে, অপরপ্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। ক্যারিয়ারের ২৩তম অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। ১০৩টি বল খেলে ৬টি চার পান তিনি।
অবশেষে ব্যক্তিগত ৭৮ রানে বিদায় নেন তামিম। খেলেছেন ১৫৫ বল, যেখানে ৮টি চারের মার ছিল। প্যাট কামিন্সের বলে ম্যাথু ওয়েড এর তালুবন্দী হন তিনি। দলের সংগ্রহ তখন ১৩৫ রান। এরপর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি সাকিব। দলীয় রান ১৪৩ তে পৌঁছালে ব্যক্তিগত ৫ রানে বিদায় নেন তিনি। লায়নের বলে কামিন্সের হাতে ধরা পড়েন সাকিব।
এরপর মুশফিক-সাব্বির জুটি যখন দলকে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ঠিক তখনই দুর্ভাগ্যজনক এক রান আউটের ফাঁদে পড়েন মুশফিক। সাব্বিরের সোজাসুজি খেলা বলটি বোলার লায়নের হাতে লেগে স্ট্যাম্পে লাগলে অফ স্ট্রাইকে দাঁড়ানো মুশফিকের বিদায় হয়। দলীয় রান তখন ১৮৬। এরপর স্কোর বোর্ডে আর কোন রান যোগ না হতেই বিদায় নেন নাসির ও সাব্বির। নাসির শূন্য ও সাব্বির ব্যক্তিগত ২২ রান করেন।
পরে মিরাজের সাথে জুটি বাঁধেন শফিউল ইসলাম। তবে দলীয় ২১৪ রানে শফিউল ও ২২১ রানে মিরাজ বিদায় নিলে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৫ রান।