নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে কুয়ালালামপুর হাইকোর্টে হাজির করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। নাজিবের বিরুদ্ধে লাখ লাখ ডলার সরকারি অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে। খবর এএফপি’র।
৬৪ বছর বয়সী নাজিবকে আদালতে হাজির করায় তিনি হলেন আদালতে হাজির হওয়া দেশটির প্রথম সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। আদালত চত্বরে প্রায় ২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা নাজিবকে ঘিরে রেখেছিল।
এরআগে মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) নাজিবকে কুয়ালালামপুরের বিলাসবহুল বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে।
খবরে বলা হয়, নাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি মালয়েশিয়ার ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থেকে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার নিজের পকেটে পুরেছেন। গত মে মাসে নির্বাচনে পরাজয়ের পর তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। অবশ্য সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেশটির সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
আজ নাজিবের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ২০ বছরের কারাদন্ড হতে পারে।
গতকাল টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিওতে জনগণের উদ্দেশে নাজিব বলেন, ‘অভিযোগগুলো বিশ্বাস করবেন না। অভিযোগগুলো সত্য নয়। আমার আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।’
পুলিশ বলছে, গত জুন মাসে তারা নাজিব রাজাকের প্রাসাদে বিলাসবহুল পণ্য ও নগদ অর্থ উদ্ধার করেন যার পরিমাণ ২৭ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ার ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের মূল্যবান জিনিসপত্র জব্দের ঘটনা।
ওয়ানএমডিবি বিশেষ টাস্কফোর্স এক বিবৃতিতে বলেছে, গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ২টা ৩৫ মিনিটে নাজিবকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমএসিসির একটি দল দুপুরে তিন-চারটি গাড়িতে করে নাজিবের বিলাসবহুল বাসভবনের সামনে হাজির হয়। তবে ওই গাড়িগুলোয় কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ ছিল না। এরপর তার বাড়িতে ঢুকে নাজিবকে গ্রেফতার করে।
এমএসিসির এক মুখপাত্রের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারের পর নাজিবকে কুয়ালালামপুরের বাইরে মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় এমএসিসির সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। গতকাল রাতটা তার সেখানেই কেটেছে। সেখান থেকে তাকে আদালতে নেওয়া হয়।
নাজিবের এই গ্রেফতার কিছুটা অনুমেয়ই ছিল। গত মে মাসের জাতীয় নির্বাচনে নাজিবের দল ইউনাইটেড মালয়েস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে ধরাশায়ী হয়। এরপর থেকেই নতুন সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা, বিশেষ করে ওয়ান ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি নিয়ে জোরেশোরে তদন্ত চলছিল। এমএসিসির তদন্তকারীরা বেশ কয়েক দফায় নাজিবের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ অর্থ, অলংকারসহ ২৭ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যমানের সম্পদ জব্দ করেছে। এ ছাড়া নাজিব, তার স্ত্রী রোসমাহ মনসুর এবং নাজিবের সৎছেলে রিজা আজিজকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।