নিউজ ডেস্ক:
একদিকে করোনা পরিস্থিতি আরেক দিকে চারপাশে বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মহীন হয়ে পড়ে অনেকেই খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে ঠায় পেয়েছেন তাদেরও ঈদের আমেজ নেই। এরই পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সংকটও দেখা দিয়েছে। তাই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন এসব এলাকার অনেক বাসিন্দা।
রাজৈরের আনসার আলী বলেন, পদ্মার ভাঙনে সবই হারিয়ে ফেলেছি। এখন বসতবাড়ি, জমি-জিরাত সবই শেষ। এখন নি:স্ব হয়ে পড়েছি। তবুও যতটুকু ঠায় পাওয়ার মতো ছিলো সবই হারিয়ে ফেললাম পদ্মার ভাঙনের কবলে। এখন আর কারো সহযোগিতা ছাড়া বাঁচার উপায় নেই। আমার মতো আরো অনেকেই আছেন যাদের কিছুই নেই।
সরেজমিনে মাদারীপুরের রাজৈর, সদর, কালকিনি ও শিবচর উপজেলায় বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। গত দুই দিন ধরে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বসতবাড়ি থেকে এখনো পানি নামেনি। ঈদুল আজহায়ও এসব এলাকার মানুষের যেনো দুর্ভোগের শেষ নেই।
সদর উপজেলার তাল্লুক গ্রামের জাফর ঘরামী বলেন, দিনমজুরের কাজ করি। কিন্তু করোনার কারণে আর কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। কাজ নেই, একেবারেই বেকার কয়েকমাস ধরে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চারদিকেই ঘিরে ধরেছে বন্যা। কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। সংসারে আছেন ১৩ জন সদস্য। খুবই কষ্টে দিনকাল যাচ্ছে।
কালিকিনি উপজেলায়ও ঈদের আনন্দ নেই। পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে আলীনগর এলাকার চরহোগলপাতিয়া গ্রামের অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি। ভয়ে আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পদ্মপাড়ের পাঁচ গ্রামের মানুষ।
অনেকেই বলছেন, একদিকে ছিলো করোনা পরিস্থিতি। কোনো কাজ ছিলো না। সংসারের খরচাপাতি চালিয়েছি ধারদেনা করে। সবকিছু ভালোই চলছিলো। এখন দেখছি আর বাঁচার উপায় নেই। একদিকে বন্য আরেকদিকে বেড়েছে পদ্মার ভাঙন। ঈদের আনন্দ বুঝতেই এখন কষ্ট হচ্ছে।
মাদারীপুরের ডিসি ড. রহিমা খাতুন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বন্যা ও নদী ভাঙনের কবলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।