নিউজ ডেস্ক:
ভোলায় ব্রি-ধান ৩৪ কৃষকদের মধ্যে বয়ে আনলো আনন্দের বন্যা। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায়, রোগ-বালাই পোকা মাকড়ের আক্রমন কম থাকায় কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছে ব্রি-ধান ৩৪ চাষে। আবার বাজারেও রয়েছে চাহিদা। দামও পাওয়া যাচ্ছে ভাল। আগামীতে আরো বেশি জমিতে এ ধান চাষাবাদের কথা জানিয়েছেন কৃষক।
ব্রি-ধান ৩৪ হচ্ছে সুগন্ধি জাতের ধান। মুগডাল ও সুগন্ধি ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পেইজ এর এ প্রকল্পটি পিকেএসএফ এর সহযোগিতায় ইফাদ এর অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা।
ভোলা জেলার ৫টি উপজেলায় প্রকল্পটির কার্যক্রম চলছে। উপজেলাগুলো হলো ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন ও চরফ্যাশন। ৮ হাজার সদস্য নিয়ে ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১১৮৪ কৃষককে আধুনিক পদ্বতিতে সুগন্ধি ধান উৎপাদন ও রোগ পোকা দমনের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ বছর ১২১০ জন কৃষক ডিলারের মাধ্যমে ১.৫ মেট্রিক টন ব্রি-ধান ৩৪ এর বীজ ক্রয় করেছেন। যার মাধ্যমে প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে এই ধানের আবাদ করা হয়েছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক অহিদ সর্দার জানান, তিনি স্থানীয় জাতের কালিজিরা ধান চাষ করতেন কিন্তু তেমন লাভের মুখ দেখেননি। এ বছর ব্রি-ধান ৩৪ চাষ করে লাভবান হয়েছেন তিনি। ধান চাষের উপর প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর তিনি গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে বিনামূল্যে ধান পেয়েছেন।
প্রশিক্ষণ তাকে আধুনিকভাবে ধান চাষাবাদের পদ্ধতি শিখিয়েছে, ফলে তাকে তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। উৎপাদনও বেড়েছে, ধানও পাওয়া গেছে বেশি। একই বক্তব্য ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চর রমেশ গ্রামের নাছির আহমেদ ও চরফ্যাশন উপজেলার চর মানিকা গ্রামের কৃষক মো: রফিক হোসেনের। তারা এ ধান চাষাবাদ করে অধিক লাভবান হয়েছেন।
স্থানীয় সুগন্ধি ধানের উৎপাদন যেখানে হেক্টরপ্রতি ২.২ মেট্রিক টন সেখানে ব্রি-ধান ৩৪ এর উৎপাদন ৩.৫ মেট্রিক টন।
এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তারাও এ প্রকল্পটি কৃষকদের জন্য অধিক লাভবান মনে করে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় সুগন্ধি ধানের মূল্য ৭৫০ টাকা সেখানে ব্রি-ধান ৩৪ এর বাজার মূল্য মনপ্রতি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। কৃষকরা এ জাতের বীজ পাওয়ায় আগামী বছর আরো বেশি জমিতে আবাদ করবে বলে জানিয়েছে।