নিউজ ডেস্ক:
শো-রুম-এ গিয়ে চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার পরে গাড়ি কেনাই ছিল এত দিনের প্রথা। এখন সেখানে পা রাখার বদলে আর পাঁচটা জিনিসের মতো আস্ত গাড়িও ইন্টারনেট মারফত ‘বুক’ করার প্রবণতা বাড়ছে।
বিভিন্ন গাড়ি সংস্থার মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের ওয়েবসাইটে কিংবা অন্যের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ‘অনলাইন’-এ গাড়ির বুকিং পরিষেবা চালু করছে। প্রতিদ্বন্দ্বীদের মতো এবার সেই পথে হাঁটল হুন্দাই মোটর-ও।
বিশেষ করে আধুনিক প্রজন্মের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ও তাদের ইন্টারনেট ঘাঁটার প্রবণতাকে কাজে লাগাতে চাইছে বিভিন্ন সংস্থা। যেমন, বৃহত্তম গাড়ি সংস্থা মারুতি-সুজুকি তাদের নতুন ‘ইগনিস’ এবং তারপর ‘ব্যালেনো আরএস’-এর অনলাইন বুকিং চালু করেছে।
সংস্থাটির একজন মুখপাত্রের বক্তব্য, গাড়িগুলি আধুনিক প্রজন্মের চাহিদা মাথা রেখেই তৈরি, যাঁরা নেট-বাজারে জিনিস কিনতেই অভ্যস্ত। গাড়ির খুঁটিনাটি সম্পর্কে তথ্য আগেই ইন্টারনেট থেকে তথ্য জেনে নিয়ে বিশ্লেষণ করে নেন তাঁরা। ১০-১৫ শতাংশ বুকিং এখন অনলাইন মারফতই হচ্ছে।
মূলত গাড়ির সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার এখন হাজারটা উপায়। আর সে-সব সুযোগ ছাড়তে চান না কেউই। টাটা মোটরসের এক মুখপাত্রের দাবি, গাড়ি কেনার আগে একজন ক্রেতা গড়ে ২৮টি সূত্র (টাচ পয়েন্ট) খতিয়ে দেখেন। এর মধ্যে ২১টিই ‘ডিজিটাল’ প্রযুক্তি নির্ভর। যেমন, বিশেষ করে মেট্রো শহরের আধুনিক ও তরুণ প্রজন্ম ওয়েবসাইট বা পোর্টালে গাড়ির রং, বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আগেই জেনে নিয়ে কোন গাড়ি কিনবেন, তা ঠিক করে নেন। বাকি থাকে শুধু শো-রুমে এসে কেনাটা সেরে ফেলা। তাই টিয়াগো, হেক্সা ও টিগর, এই তিন গাড়িরই অনলাইন বুকিং চালু করেছে তারা।
শহর কেন্দ্রিক এই প্রবণতাকেই এ বার হাতিয়ার করতে উদ্যোগী হুন্দাই-ও। সংস্থার মুখপাত্র জানান, মূলত প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের শহরের এমন ক্রেতাদের কাছে বাড়তি সুবিধা দিতেই সমস্ত গাড়ির অনলাইন বুকিং পরিষেবা চালু করেছেন তারা। তার দাবি, হুন্দাই প্রথম সংস্থা, যারা পুরোদস্তুর নিজেরাই এবং সব গাড়ির জন্য এই ব্যবস্থা চালু করেছে।
উল্লেখ্য, অনলাইনে বুকিং-এর পরে গাড়ি পছন্দ না-হলে বুকিং-এর অর্থ ফেরত দেয় সব সংস্থাই। অনলাইনে এখনও বুকিং ব্যবস্থা চালু না-করলেও এ ধরনের প্রযুক্তিকে পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারছে না হোন্ডাও। কারণ প্রযুক্তি নির্ভর সেই আধুনিক প্রজন্মের জীবনযাত্রাই।
সংস্থাটি জানায়, গাড়ির খোঁজ-খবর অনলাইনে আগ্রহীরা জানতে চাইতে পারেন সংস্থার কাছে। তারপর ডিলারদের তরফে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
নতুনরূপে আগামী ১৬ মে বাজারে আসছে মারুতি-সুজুকির নতুন ডিজায়ার। তার আগে পেট্রোল ও ডিজেলচালিত গাড়িটির ‘বুকিং’ চালু করল সংস্থাটি। উল্লেখ্য, আগে এটি সুইফট-ডিজ্যায়ার বলা হলেও নতুন গাড়িতে সুইফট শব্দটি বাদ রেখেছে তারা।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা