নিউজ ডেস্ক:
মেইন মিল বা দিনের প্রধান খাবার হিসেবে আমরা ভাত খেতে অভ্যস্ত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা ধান বা চাল থেকে তৈরি খাবার খেতে আগ্রহী।
কিন্তু এর বহু বিকল্প রয়েছে। ভাতের পরিবর্তে কম ক্যালরিযুক্ত অন্যান্য শর্করা খাওয়া ভালো। ভাতের পরিমাণ কিছু কিছু করে কমিয়ে এসব খাবার খেলে তা জনস্বাস্থের জন্য যেমন ভালো, তেমনি আর্থিকভাবেও সাশ্রয়ী হবে।
ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) বেশি বলে এটি শর্করা বাড়ায়। এছাড়া শকর্রা হিসেবে লাল আটার রুটি, চিড়া, মুড়ি, খই, ভুট্টা, ওটস, কর্নফ্লেক্স ইত্যাদি বেশ স্বাস্থ্যকর। পাস্তা ও নুডলসেও শর্করা বেশি থাকে। গ্রামে অনেকে ভাতের বদলে মিষ্টি আলু সেদ্ধ খান। এ আলু শর্করা হলেও এতে প্রচুর আঁশ থাকায় জিআই কম।
শর্করা হিসেবে ক্যালরির মান কিন্তু ভাত, রুটি, নুডলস ইত্যাদিতে প্রায় সমান। তাই ভাতের পরিবর্তে সমপরিমাণ ক্যালরি হিসাব করে যেকোনো বিকল্প শর্করা খাওয়া যাবে। তবে যে শর্করা যত দ্রুত রক্তে মেশে, তত খারাপ। সে হিসেবে সাদা ভাত, সাদা ময়দার তৈরি খাবার, আলু, পাউরুটি ইত্যাদি তুলনামূলক দ্রুত শোষিত হয়ে রক্তে মেশে। আর এসব খাবারে আঁশের পরিমাণও কম।
ভাতের চেয়ে গম বা আটার রুটির পুষ্টিগুণ কোনো অংশেই কম নয়। রুটি অনেক বেশি ক্যালরি উৎপাদনে সক্ষম। আটার অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। আটায় লিগনান জাতীয় এক ধরনের উপাদান রয়েছে, যা ক্যানসার প্রতিরোধ করে। ডায়াবেটিস রোগের জন্য আটার রুটি উপকারী। কারণ এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। হার্ট অ্যাটাক রুখতে সহায়তা করে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। বাদামি আটা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার আলু। এতে রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম, যা শরীরের জলীয় ভাব বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
আলুতে প্রচুর আঁশ থাকায় তা দেহের জন্য যথেষ্ট উপকারী। দেহের কোলেস্টেরল কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে এটি। আলুর একটি বড় টুকরায় থাকে ২৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, যা দৈনিক চাহিদার প্রায় অর্ধেক। দেহের প্রোটিন প্রক্রিয়াজাত করতে সহায়তা করে ম্যাঙ্গানিজ, যা রয়েছে আলুতে। আলুর ভিটামিন বি৬ হৃৎপিণ্ড, পরিপাকতন্ত্র, মাংসপেশি ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয়।
যবের রুটি সহজে হজম হয় এবং শরীরের উদ্যম বাড়ায়। যবের একটি খাবারের নাম ছাতু। এটি পানিতে ভিজিয়ে রেখে লবণ, গুড় বা চিনি দিয়ে খাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালে শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য তৃষ্ণা দূর করাার জন্য ছাতু খাওয়া হয়। যবের ছাতু শরীরে শক্তি জোগাতে অদ্বিতীয়। যব দিয়ে বার্লি তৈরি করা যায়। এটি ভাতের চেয়ে তাড়াতাড়ি হজম হয়। রোগীর পথ্য হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে। তবে শুধু পথ্য হিসেবেই নয়, সাধারণ খাবার হিসেবেও এটি দারুণ। যব দিয়ে আটা বানিয়ে তা খাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যবের আটা বেশি উপকারী।