নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ থেকে কার্গোবাহী বিমান সরাসরি যুক্তরাজ্যে পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার।
এ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে খাদ্য, শাকসবজি আমদানি করতেন যে ব্যবসায়ীরা, মূলত তারাই সমস্যায় পড়েছিলেন।
প্রায় দুই বছর পর তুলে নেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এখন ব্যবসায়ীরা কি আবার আগের মতো সব পণ্য আমদানি করতে পারবেন?
ব্রিটিশ-বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড ভেজিটেবল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার বলেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে সে সুযোগ নিয়ে এরই মধ্যে অন্যান্য দেশ এ বাজারে ঢুকে পড়েছে। ফলে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে গেছে বাংলাদেশ।
হায়দার বলেন, এ অবস্থার কারণে ব্যবসা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে আগে যত মালামাল আসত নিষেধাজ্ঞার ফলে অন্যান্য দেশ যেমন ভারত, পাকিস্তান, জর্ডান, হল্যান্ড, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ এসব পণ্য উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে।
তিনি বলেন, এমবার্গোর ফলে সে সুযোগে অন্যান্য দেশ এ বাজারে ঢুকে পড়েছে।
হায়দার আরও বলেন, এখন আমাদের পণ্য নিয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ আছি। যেসব দেশ এসব পণ্যের ব্যাপারে আগে জানত না, সেসব দেশের সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মার্কেটটা ধরে ফেলেছে। সুতরাং বিরাট একটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ।
গত দুই বছর ধরে এ নিষেধাজ্ঞার ফলে বাজারে বাংলাদেশের যে অবস্থা ছিল, সেটি অনেক নিম্নমুখী হয়ে গেছে। একসময় এমন কিছু সবিজ ছিল, যা বাংলাদেশের বাইরে অন্য কোথাও থেকে আসত না। এর মধ্যে রয়েছে- বরবটি, শিমসহ বেশ কয়েক ধরনের সবজি।
এখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর সেই বাজার ফিরে পাওয়া কি কঠিন হবে?
এমন প্রশ্নে এই আমদানিকারক বলেন, অন্যান্য দেশ চেষ্টা করছে যাতে তাদের বাজার বন্ধ হয়ে না যায়। তারা সাবসিডি দিচ্ছে ও বাজার মনিটর করছে- বাজার ধরে রাখার জন্য।
বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের কি পরিমাণ পণ্য আমদানি করা হয় জানতে চাইলে রফিক হায়দার বলেন, ২০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের পণ্যের চাহিদা ছিল ৪০ মিলিয়ন ডলারের। ২০ বছর পরও এখনও সেই ৩০-৪০ মিলিয়নে আটকে আছে বাংলাদেশ। বাজার কিন্তু ৪০০ মিলিয়ন ডলারের।
তার মতে, দেশ থেকে যারা রফতানি করেন, তাদের অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের চাহিদা কি সেটি সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেননি। তারা মনে করেন, স্থানীয় বাজারে যেভাবে পণ্য পাঠিয়ে দেন, সেভাবে পাঠালেই হয়। কিন্তু যুক্তরাজ্যের বাজার আর স্থানীয় বাজার তো এক নয়।
এ বিষয়গুলো যাদের দায়িত্ব মনিটর করার, তারা তা সঠিকভাবে না করায় বাজারটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে যুক্তরাজ্যের আমদানিকারকরা মনে করেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।