নিউজ ডেস্ক:
শরীয়তপুরে বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাজারো কৃষক। এ বছর জেলায় ২৮ হাজার ৫শ’ ২১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাষিদের আশঙ্কা সময় মতো ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ আইলে মাটি তুলছেন আবার কেউ জমিতে সার দিচ্ছেন। কেউবা পাওয়ারটিলার ও মই দিয়ে জমির মাটি সমান করছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে চলছে জমি পরিচর্যার কাজ।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর অন্য বছরের তুলনায় বোরো চাষের জমি অনেকটা কমে গেছে। ধান চাষে লোকসান হওয়ায় এমনটা হয়েছে বলে জানান তারা।
জেলায় ২০ পৌষ থেকে বোরো আবাদ শুরু করেন কৃষকরা। এ আবাদ মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। এই ধান তোলা হবে আগামী চৈত্র-বৈশাখ মাসে। সরকার বা কোনো কোম্পানি যদি বোরো ধান ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করত তবে বোরো ধান চাষে কৃষকরা বেশি উদ্বুদ্ধ হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৫২১ হেক্টর। যা গত বছর ছিল ২৮ হাজার ৫৮২ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৬১ হেক্টর জমি কমেছে। এ মৌসুমে এ পর্যন্ত ২২ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আশাবাদী কৃষি বিভাগ।
সদর উপজেলার আটং গ্রামের কৃষক সাদ্দাম হাওলাদার, সবুজ শেখ, রাসেল খান ও নড়িয়া উপজেলার আচুরা ও আনাখণ্ড গ্রামের কৃষক হারুন কাজী ও কাশেম শেখ জানান, এক বিঘা জমিতে বোরো আবাদে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর ধান পাওয়া যায় ৩২ থেকে ৩৫ মণ। তবে কাটা মাড়াইয়ের পর বাজারে ধান বিক্রি করতে হয় মণপ্রতি ৫০০ থেকে সাড়ে ৫শ টাকা দরে।
কৃষকরা আরো অভিযোগ করে বলেন, ধান চাষ করে ততটা লাভ হয় না। ধানের চেয়ে বেশি লাভবান হওয়া যায় মাছ চাষ করে। তাই আমাদের অনেকে এখন মাছের চাষ করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, জেলায় এ বছর আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষককে সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। আর কৃষকের উৎপাদিত ধান যদি কৃষক নিজেই কিছু দিনের জন্য মজুদ রাখতে পারে তাহলে লোকসানের মুখে পড়বেন না।