নিউজ ডেস্ক:
তিনি যে বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম ফুটবলার, সে বিষয়ে এখন কারও কোনও সন্দেহ নেই। ক্লাব ফুটবলের প্রায় সব খেতাবই জেতা হয়ে গেছে এই ফুটবল জাদুকরের। কিন্তু, বিশ্বকাপ এখনও অধরা লিও মেসির।
আগামী বছর রাশিয়ায় ক্যারিয়ারের চার নম্বর বিশ্বকাপে নামবেন আর্জেন্টিনার এই তারকা। আর এবারই যে খেতাব জয়ের শেষ সুযোগ, সেটা সবাই জানে! শুধু স্বয়ং মেসির মুখ থেকে শোনাই বাকি ছিল। সেটাও হয়ে গেল।
টিওয়াইসি স্পোর্টসের সাক্ষাৎকারে ক্যামেরার সামনে বসে মেসি বলেই ফেললেন, বিশ্বকাপ জেতার এটাই শেষ সুযোগ। কারণ, তারপর হয়তো সরে যেতে হবে। কেন? মেসির ব্যাখ্যা, দীর্ঘদিন বিশ্বকাপ জিতিনি। লোকে চায় আমরা বিদায় নিই। যারা সমালোচনা করছেন, তারা জাতীয় দলে একই মুখ দেখে দেখে ক্লান্ত।
সুতরাং, আমাদের এই ব্যাচটার সামনে এটাই শেষ সুযোগ কাপ জেতার। অবশ্যই আমরা সাগ্রহে তার জন্য অপেক্ষা করে আছি। কিন্তু, যদি খারাপ ফল হয়, তা হলে আমাদের সবাইকে সরে যেতেই হবে। কারণ, তার পরও জাতীয় দলে খেলা চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাছাড়া আমরা এমনিতেই দীর্ঘদিন দলে আছি।
বিশ্বকাপের মূলপর্বে যাওয়াই একটা সময় কঠিন হয়ে পড়েছিল আর্জেন্টিনার কাছে। ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে মেসির হ্যাটট্রিক দলকে সরাসরি মূলপর্বে তুলে দেয়। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার গ্রুপে আছে আইসল্যান্ড, নাইজেরিয়া এবং ক্রোয়েশিয়া। ব্যর্থ হোন বা না হোন, সরে যাওয়ার কথা ইতিমধ্যেই বলে ফেলেছেন মেসির সতীর্থ মাসচেরেনো।
শুধু জাতীয় দল নয়, আগামী মৌশুমে বার্সেলোনাও ছাড়ার কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে মেসি বললেন, মাসচেরানো? বলব না, ও আমায় কী বলেছে? তবে যদি বার্সা ছাড়ে, তা হলে কিছু বলার নেই। আমি বুঝি ওর ব্যাপারটা। ও আসলে আরও খেলতে চায়। বার্সায় তো প্রায়ই বসতে হচ্ছে।
মেসি নিজেও ইদানিং অনেক ম্যাচেই বেঞ্চে বসছেন বার্সার হয়ে। বিশ্বকাপ জয়ের জন্য নিজেকে তরতাজা রাখা দরকার। সেজন্য এই বিশ্রামটা মেনে নিয়েছেন। তবু বললেন, বেঞ্চ রোল? আমার পক্ষে এই বসে থাকা বা মাঝখানে বসে যাওয়া প্রচণ্ড কষ্টকর। তবে পরিস্থিতির বিচারে ব্যাপারটা মেনে নিতে হচ্ছে। তবু বলছি, বসে থাকাটা মানা যায় না। বাইরে থেকে বোঝা যাবে না, যে বসে থাকে তার মনের ভিতরে কী হয়?
বলেছিলেন, ঘরের মাঠে নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে খেলে অবসর নেবেন। কিন্তু, সত্যি কি সেটা হবে? মেসি বললেন, অবশ্যই বলেছি, একাধিকবার যে, নিউওয়েলসে খেলে অবসর নিতে চাই। কিন্তু, সেটা হবে কিনা বলতে পারব না। এর কারণ, আর্জেন্টিনার অবস্থা। আমার কাছে পরিবার, সন্তানদের শান্তি এবং নিরাপত্তা সবার আগে। রাস্তায় বেরলেই ওখানে লোকে ঘিরে ধরে। গায়ের উপর চলে আসে। এমনভাবে, যেন পারলে মেরেই ফেলে। সুতরাং…!
নাহ, ব্যালন ডি’ওরের রাত বলে নয়, কারণটা মেসির দেশ আর্জেন্টিনার সঙ্গে সম্পর্কিত। গত ১১ মাসে দু’বার তার মূর্তি দুষ্কৃতীরা ভেঙে দিয়ে গেল রাতের অন্ধকারে। কেন জাতীয় নায়কের প্রতি এই ক্ষোভ, সেটা মেসি নিজেও বুঝে উঠতে পারেননি।
সরাসরি প্রশ্নটা এড়িয়ে গিয়েছেন এই বলে যে,…আমি এত দূরে থেকে কী বলব? কিন্তু, বার্সেলোনা শিবিরের খবর, ঘরের মাঠ নিয়ে এবার ক্রমশ বিরক্ত হতে চলেছেন মেসি। ফুটবল কেরিয়ারের শেষপর্বে ঘরের ফেরার কথা ভাববেন? বোঝাই যাচ্ছে, মেসি আদৌও তেমনটা ভাবছেন না।