নিউজ ডেস্ক:
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ব্যাংকিং খাতে ‘বিপর্যয়’ রুখতেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ‘ভর্তুকি’ দেওয়া হয়েছে। কেননা ব্যাংক খাতে বিপর্যয় ঘটলে সারাদেশকে ধ্বংস করে দিতে পারে। সে কারণেই আমরা এ পদক্ষেপ নিই। ব্যাংকগুলোকে সরকার খামাখা ভর্তুকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে এখানে। বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাত খুবই নাজুক। পরিস্থিতি নাজুক বলেই বিপর্যয় এড়াতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে দায়যুক্ত ব্যয় ব্যতীত অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর আলোচনা শেষে জবাবী বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে মূলধন ঘাটতি পূরণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দসহ ব্যাংক খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম মিলন ও স্বতন্ত্র রুস্তম আলী ফরাজী।
তারা বলেন, লুটপাট, দুর্নীতি ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্দশায় থাকা ব্যাংকগুলোকে এভাবে মূলধন জোগানো নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা রয়েছে। বাজেটের ছাঁটাই প্রস্তাব তোলার সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এই যে বেসরকারি ব্যাংক এর সব ডিরেক্টর পারিবারিক, স্বতন্ত্র ডিরেক্টর নেই, লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংক এখন লুটপাটের জায়গা হয়েছে। সরকারি ব্যাংকতো হয়েছেই। ব্যাংক আর ব্যাংক থাকবে না। মুদি দোকান হয়ে যাবে।
ফখরুল ইমাম বলেন, ইসলামপুরে ইনভেস্ট করি। এক লাখ টাকায় ৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। ব্যাংকে রাখলে টাকা কেটে নেয়। এটা নিয়ে গবেষণা করতে হবে। এটা বের করতে পারলে অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।
নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, আমাদের ব্যাংকের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। বেশিরভাগ ব্যাংক পরিচালক নিজেদের মধ্যে ঋণ ভাগ করে নিচ্ছে। মালিক ও পরিচালকরা টাকা গিলে খাচ্ছে। স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে। অর্থই অনর্থের মূল। এখন পারিবারিকভাবে ডিরেক্টর হতে পারে। সরকারি ব্যাংক জনগণের টাকা দিয়ে পুষবেন। আবার বেসরকারি ব্যাংকও একই দিকে যাচ্ছে। ব্যাংক কমিশন করেন। জোরালো ও কঠিনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এখানে যেসব অভিযোগ এসেছে। প্রথমে হয়েছে ব্যাংকগুলো রেসপনসিবল নয়। এগুলো পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালক নেই। সুশাসন দুর্লভ। এই চারটি কথা বলা হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালক সদস্য স্পন্সর আছেই। পারিবারিক সদস্যদের বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনটি সংসদের বিবেচনায় আছে। সংসদীয় কমিটি বিচেনা করছে। তারা প্রস্তাব ও সুপারিশ দেবেন। তখন সংসদ পাস করবেন। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে সরকারি অবস্থান জানাতে পারব। তিনি আরো বলেন, ব্যাংকগুলোকে সরকার খামাখা ভর্তুকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে এখানে। বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাত খুবই নাজুক। পরিস্থিতি নাজুক বলেই বিপর্যয় এড়াতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন দেশে ৫৮টি ব্যাংক প্রয়োজন আছে কি না। বিভিন্ন দেশে এভাবেই ব্যাংকের উন্নতি হয়েছে। ভবিষ্যতে কনসলিডেশন হবে। সেই ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছি।