নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গার বাড়াদী ইউনিয়ন আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা সভায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে গোপালনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভা থেকে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৮ নভেম্বর আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়ন আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করতে প্রস্তুতি চলছে। তাই সম্মেলনের স্থান নির্ধারণের জন্য গত মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে ইউনিয়ন আ.লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় দুটি মাঠ নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষ থেকে এনায়েতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ এবং সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেনের পক্ষ থেকে সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ নির্বাচনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। দুটি মাঠের মধ্যে একটি মাঠ নির্ধারণের জন্য উপস্থিত নেতা-কর্মীদের সমর্থনের ভিত্তিতে এনায়েতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠটি বাড়াদী ইউনিয়ন আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করার জন্য প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত হয়। এরপরইে সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, প্রস্তুতি সভায় সভাপতির লোকজন কৌশলে নাটকীয়ভাবে জনসমর্থন আদায় করেছেন। যেটা দলের সাধারণ নেতা-কর্মীরা বুঝতে পারে, সেই জন্য এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তা হাতিহাতি ও মারামারিতে রূপ নেয়।
এদিকে, এ বছরের জুলাই মাস থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। আগষ্ট মাস শোকের মাস হওয়ায় কিছুটা থমকে যায় কমিটি গঠন কার্যক্রম। তবে, কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার তৃণমূল পর্যায়ের কমিটি গঠনের কাজ সম্পূর্ণ হলেও গত ২৮ জুলাই আলমডাঙ্গার বাড়াদী ইউনিয়নের নতিডাঙ্গার ২নং ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে বাড়াদী ইউনিয়নের অনুপনগর গ্রামে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের নিকটতম আত্মীয়কে সভাপতি করায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওই কমিটি পূণরায় করার জন্য উপজেলা আ.লীগের নিকট আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে বাড়াদী ৯নং ওয়ার্ড আ.লীগের কমিটি গঠন করেন সাধারণ সম্পাদক সেক্রেটারী মকবুল হোসেন। একই ভাবে ৯নং ওয়ার্ড কমিটি বাতিল করার জন্য উপজেলা আ.লীগের নিকট সভাপতির পক্ষ থেকে আমিনুল ইসলাম আবেদন করেন। দুই ওয়ার্ডের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ইয়াকুব আলী মাস্টার ওই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা আ.লীগের প্রবীণ একজন রাজনীতিবীদ বলেন, ‘সম্মেলনের পূর্বে দুই পক্ষকে এক সঙ্গে নিয়ে আলোচনায় না বসলে ইউনিয়নের রাজনীতির উপর বিরুপ প্রভাব পড়বে। পরিস্থিতি সামলানো না গেলে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পাবে।
এই ব্যাপারে বাড়াদী ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা জনসমর্থনে এগিয়ে তাই এনায়েতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আলোচনা সভার রেজ্যুলেশন উপজেলা নেতাদের নিকট প্রেরণ করেছি।’
সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ করার জন্য জানানো হয়েছে। উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে কোথায় সম্মেলন করা যায় এই বিষয়ে ডেকে একটি পক্ষ ‘অনাকাঙ্খিতভাবে জোরপূর্বক রেজ্যুলেশন করে স্থান নির্ধারন করেছে।’
বাড়াদী ইউনিয়নে সম্মেলনকে আ.লীগের উত্তেজনার ব্যাপারে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু বলেন, ‘এই ইউনিয়নে শুরু থেকে গোলোযোগ মারামারি লেগেই আছে। আমরা দুই পক্ষকে নিয়ে একাধিক বার আলোচনা করেছি। তবে, দলের মধ্যে যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কাউন্সিলের আগেই আবারও নতুন করে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারা এই নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে আছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’