নিউজ ডেস্ক:
বাগেরহাটে টমেটোর বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মৎস্য ঘেরের বেড়ি বাঁধের ওপর এবার তিন প্রকার টমেটোর চাষ হয়েছে। এতে চাষিরা প্রায় ২৬ হাজার মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন ।
লাভলী, হাইটপ ও বিজলি এই তিন নামের হাইব্রিড জাতের টমেটোর চাষ করে চাষিরা এই সফলতার মুখ দেখেছেন।
অবশ্য এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বাগেরহাটে শীতকালীন অন্যান্য সবজির উৎপাদনও ভাল হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩২৬ হেক্টর বেশি জমিতে শীতকালীন ফসল উৎপাদন হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। নিচে পানিতে মাছ চাষ, উপরে বেড়িবাঁধে টমেটো ও অন্যান্য সবজির চাষ এখন বাগেরহাটে জনপ্রিয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্নস্থানেও যাচ্ছে।
কৃষিবিভাগ জানায়, বাগেরহাটের চিতলমারী, কচুয়া ও মোল্লাহাট উপজেলায় মৎস্য ঘেরের বেড়িবাঁধের ওপর এবার ১০৮০ হেক্টর জমিতে টমেটো উৎপাদন হয়েছে। এখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল মাত্র ৬৫৪ হেক্টর। কৃষি বিভাগের আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কৃষিবিভাগের বিশেষ নজরদারিতে এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আর টমেটোরও বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ জেলায় টমেটোর সবচেয়ে ভাল ফলন হয়েছে চিতলমারীতে। এই হাটের দিনে চিতলমারী বাজারে কৃষকরা নৌকা ও ভ্যান বোঝাই করে তাদের উৎপাদিত টমেটো নিয়ে আসেন। এদিন মন প্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে টমেটো বিক্রি হয়েছে। বাজার দর একটু কম হলেও কৃষকরা তারপরও খুশি।
চিতলমারী উপজেলার টমেটো চাষি সুমান্তÍ বাড়ৈ জানান, এ বছর ঘেরের পাড়ে বেড়িবাধে লাভলী, হাইটপ ও বিজলি নামের তিন জাতের টমেটো চাষ করেছেন তিনি। উৎপাদনও অনেক ভালো হয়েছে। মৌসুম শুরুতে মন প্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। তবে এখন দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
অপরুপ দাস নামের অপর এক চাষি জানান, টমেটো পাকার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে নিয়ে আসতে হয়। কাঁচামাল ঘরে রাখা যায় না। তাই ব্যবসায়ীদের কাছে অনেকটা জিম্মি চাষিরা। তিনি দাবি করেন চিতলমারীতে সবজি সংরক্ষণের জন্য সরকারীভাবে হিমাগারের ব্যবস্থা করলে চাষিরা তাদের ফসলের ভালো দাম পেতেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিতলমারী একটি কৃষিপ্রধান উপজেলা। এই উপজেলায় সব মৌসুমেই সবজির ভাল উৎপাদন হয়ে থাকে। সবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার প্রয়োজন। এছাড়া পদ্মা সেতু চালু হলে অল্প সময়ে জেলার সবজি দেশব্যাপী দ্রুত সরবরাহ করা সহ বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন জানান, বাগেরহাটের মৎস্য ঘেরের বেড়িবাঁধের উপর শীতকালীন ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে কৃষি বিভাগের আধুনিক প্রযুক্তি, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কৃষিবিভাগের বিশেষ নজরদারির জন্যই।