বাংলাদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ভারতের অন্তত ১৭ জায়গায় অভিযান চালিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)।
আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে এই অভিযান শুরু হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অর্থ পাচারের তদন্তে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ঝাড়খণ্ডের একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে। দুই প্রদেশের অন্তত ১৭টি স্থানে এ তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১২টি জায়গায় চলছে ইডির অভিযান। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম, বনগাঁ, ব্যারাকপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছেছে।
জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের একটি মামলার সূত্র ধরে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যমগ্রাম এলাকার বাসিন্দা পিংকি বসু নামে এক নারীর সন্ধান পায় ইডি। ইডির অভিযোগ সম্প্রতি শত শত কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করেছেন এই নারী।
ঝাড়খণ্ডে দায়ের হওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইডি তদন্তে উঠে আসে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনের বিষয়টি। পরে সেই কালো টাকা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে সাদা করার চেষ্টা হয়েছে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
অনুপ্রবেশ ঘিরে কালো টাকার লেনদেনের তদন্তে একটি ক্যাব ব্যবসার তথ্যও ইডির হাতে উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।
জানা যায়, বর্তমানে জেল হেফাজতে থাকা বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্পপতির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন এই নারী। এই নারীর মধ্যগ্রামের তিনটি ফ্ল্যাট, বারাসাতের দুটি ফ্ল্যাট, একটি বার কাম রেস্তোরাঁয় মঙ্গলবার সকাল থেকে চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়।
তবে তার থেকে কত নগদ অর্থ বা সম্পদ উদ্ধার হয়েছে সেই বিষয়ে স্পষ্ট করেনি ইডি। উদ্ধার হওয়া অর্থ বাংলাদেশের ওই শিল্প গোষ্ঠীর কী না সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে ইডি।
একই সঙ্গে ওই নারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে নারী পাচারের অভিযোগ এনেছে ইডি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা ভারতে পাচারের অভিযোগে ভারতের বনগাঁ এলাকার পেট্রাপোল সীমান্তের এক ট্যাক্সি ড্রাইভার পিন্টু হালদার ও ট্যাক্স সীমান্ত ব্যবসায়ী পার্থ সাহার বাড়িতে সোমবার অভিযান চালিয়েছে ইডি।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে ঘিরে রাখা হয়েছে পার্থ সাহার বাড়ি। বাড়ি তল্লাশির পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বাড়ির সদস্যদের।
এদিকে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে শত শত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। রাতারাতি দেশত্যাগ করলেও ভারতে এসে কেউই নেই আর্থিক সংকটে। পরিচিত ও আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে ভারতে আগে থেকে গড়ে তোলা সম্পদ ও বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া টাকায় বহাল তবিয়তেই আছেন তারা।