ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ‘দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন’ বা ডিভিসি’র সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় বলেও জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এমনই এক ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রাজ্যের একাধিক জেলায় যে বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতার এই ঘোষণা এসেছে।
এর পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, বন্যার পানিতে নয়, ডিভিসি মাত্রাতিরিক্ত পানি ছাড়ার কারণেই রাজ্যে এই বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
একইদিন বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া, রাতুলিয়ার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমে সাথে কথা বলে মমতা উল্লেখ করেন, আমি তো ডিভিসির সাথে রাজ্যের সমস্ত সম্পর্ক কাট-অফ করবোই। কলকাতা ফিরে গিয়ে আমার এই একটাই কাজ।
মমতার দাবি, বৃষ্টির জন্য এই বন্যা হয়নি, পুরোটাই পানি ছাড়ার কারণে হয়েছে। গত ৪-৫ দিন ধরে বৃষ্টি হয়েছে সেটা আমরা সহ্য করতে পারি কিন্তু ডিভিসি যেভাবে ৫ লাখ কিউসেকে পানি ছেড়েছে এটা কোনভাবেই সহ্য করা যায় না। এটা আগে কোনোদিনও হয়নি। এভাবে বছরের পর বছর চলতে পারে না। দোতলার সমান পানি ঢুকেছে। আমি প্রতিনিয়ত বিষয়টির উপর নজর রাখি।
ডিভিসির চেয়ারম্যানকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করি, আমার মুখ্য সচিবও ফোন করেন। তাকে অনুরোধ করেছিলাম আপনার বাঁধে যখন ৮০ শতাংশ পানি জমে যায় তখন কেন একটু একটু করে ছাড়েন না। কারণ আমার এখানে সমস্যা হয়।
এদিকে আগামী তিনদিন ঝাড়খণ্ডের সাথে সীমান্ত বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়ে মমতা বলেন, তার কারণ ওই সীমান্ত দিয়ে গাড়ি ঢুকলে পানিতে ভেসে যাবে। এটা আমি চাই না।
এদিকে দিন যত যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি ততই খারাপ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া, হুগলীর খানাকুল, পুরশুরা, আরামবাগ ও হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুরসহ পূর্ব বর্ধমান এবং বীরভূম জেলার কিছু অংশে।
অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের শীলাবতী, ঝুমি, কেঠিয়াখালের প্লাবিত পানিত ইতিমধ্যেই ঘাটাল মহকুমা বিপর্যস্ত বলে জানা গেছে। সেখানকার বহু মানুষ নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে বিভিন্ন উঁচু ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। পুরো অঞ্চলের পরিস্থিতি আকাশ থেকে ড্রোনের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।