একটি ছবি অনেক কথার বহিঃপ্রকাশ। ব্যক্তি বা সামাজিক জীবনের নানা ঘটনার নানা মুহূর্তকে আমরা ক্যামেরার মাধ্যমে বন্দী করে রাখি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক উদ্ভবের পর ছবি তুলে তা ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুদের দেখানোর প্রবণতা আমাদের মধ্যে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কিন্তু ইদানিং ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে মেয়েদের ছবি নিয়ে তা নানান উদ্দেশ্যে ব্যবহারের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। ফটোশপের কারসাজিতে একটি মেয়ের ছবি অশ্লীলভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে পর্নো সাইটে। একটি মেয়ের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে একাধিক আইডি (ফেসবুক অ্যাকাউন্ট) খুলে তা ব্যবহারের দৃষ্টান্ত তো অহরহ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা জানছে না, তার ছবি কোথায় কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এতে করে ব্ল্যাকমেইলিং বা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী তরুণীরা।
ধরুন, আপনি আপনার সাঁতার কাটার ছবি, ব্যায়ামের ছবি বা সমুদ্রের উপকূল ধরে হেঁটে বেড়ানোর ছবি ফেসবুকে আপলোড করলেন। সেই ছবি চুরি করে একদল মানুষ পর্নো ওয়েবসাইটে আপলোড করছে, আর তাতে জুড়ে দিচ্ছে নানা বিশ্রি ক্যাপশন। সাইটটি ব্যবহার করেন যারা, সেই বিকৃত মনস্ক মানুষজন আবার সেই ছবি তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেন। আপনার ছবিতে বাড়তে থাকে নোংরা, বিশ্রি কমেন্টের সংখ্যা।
শুধু কি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ছবিই চুরি হচ্ছে? না, এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই বাচ্চাদের ছবিও। শিশুদের ছবি চুরি করে শিশুদের পর্নো ওয়েবসাইট বা পেডোফিলিয়া ওয়েবসাইটে আপলোড করছে একদল বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ।
সম্প্রতি এই খবর সামনে আসার পরই, অস্ট্রেলিয়ায় নবনিযুক্ত চিলড্রেনস সেফটি কমিশনার অ্যালেস্টার ম্যাকগিবন এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, একটি পেডোফিলিয়া বা শিশুদের পর্ণ সাইটে দেখা গেছে, সেখানে আপলোড করা প্রায় ৪৫ লাখ ছবির অর্ধেকই নেওয়া হয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সোশ্যাল সাইট থেকে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সুসান ম্যকলিন বলেন, ‘আপনি যখন অনলাইনে কোনো ছবি দিচ্ছেন, সেই ছবির ওপর থেকে আপনার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়। অনেকে তো আবার অ্যাকাউন্ট সাইন আউট না করেই বের হয়ে যান। ফলে অ্যাকাউন্টটি হয়ে যায় অনিরাপদ।’
কাজেই ফেসবুকে ছবি দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন হোন। এমন কোনো ছবি আপলোড করবেন না যাতে করে আপনি বা আপনার বাচ্চা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়।