নিউজ ডেস্ক:
এই চোখের অসুখ আপনাকে অন্ধ করে দেবে না। কিন্তু তার বদলে যা যা ঘটবে, তা অন্ধত্ব থেকে কম সাংঘাতিক নয়।
চোখ ফোলা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া তো রয়েছেই। সব থেকে ভয়ঙ্কর, এই চোখের অসুখের কারণটি যখন তখন তার বিচরণের জায়গা বদলায়।
এক চোখ থেকে অন্য চোখে দিব্য ঘুরে বেড়ায় সে। দু’চোখের মাঝখান অর্থাৎ নাকের ভিতর দিয়ে সে অনায়াসে যাতায়াত করে। আর এই কাণ্ডটি ঘটায় এক প্রকার কৃমি। লোয়া লোয়া নামের এই কৃমির বাস ম্যানগ্রোভ অরণ্যে।
তবে এই কৃমি সরাসরি মানব দেহে আক্রমণ করে না। ম্যানগ্রোভ অরণ্যের এক বিশেষ মাছি, ডিয়ারফ্লাইয়ের কামড় থেকে সে প্রবেশ করে মানব শরীরে। আর অন্য কোনও জায়গা নয়, কৃমিটি সোজা গিয়ে বাসা বাঁধে চোখে। এই সংক্রমণকে চিকিৎসাবিজ্ঞান ‘লোইয়াসিস’ নামে চিহ্নিত করেছে।
সম্প্রতি কঙ্গোর বাসিন্দা জাঁ-মারে পোঙ্গোমাকে এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তার লোইয়াসিস-এ আক্রান্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা। বছর দশেক আগে তিনি এই কৃমির কবলে পড়েন। তার জীবন নরকে পরিণত করে এই প্রাণী। সারাদিন অশ্রুপাত, ফোলা চোখ তো ছিলই, সর্বোপরি ছিল কৃমিটির এক চোখ থেকে অন্য চোখে গমনের কালের যন্ত্রণা।
দ্রুত বংশ বিস্তার করে লোয়া লোয়া। সে আর এক বিড়ম্বনা। সব রকমের যন্ত্রণাই ভোগ করেছেন পোঙ্গোমাকে। মাঝে মাঝে তার ইচ্ছে হতো কারোকে দিয়ে সূচ ফিটিয়ে চোখ থেকে কৃমিগুলিকে বের করে আনার। কিন্তু তেমনটা হওয়া সম্ভব নয়। ফলে অপেক্ষা করতে হয়। ১০ বছর পরে তার সংক্রমণ পুরোপুরি দূর হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, লোয়া লোয়ার অস্তিত্ব প্রথম জানা যায় ১৭৭০-এর দশকে। যে সময়ে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ক্রীতদাস চালান যেত আমেরিকায়। এই মুহূর্তে পৃথিবীতে ১০ মিলিয়ন মানুষ লোইয়াসিস-এ আক্রান্ত।