জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারে চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের জনসভা : প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি ছেলুন
খন্ড খন্ড ছিল ও স্লোগানে মুখরিত সমাবেশস্থল : যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে মানুষ
নিউজ ডেস্ক:দলের মধ্যে থাকা কিছু বিক্ষিপ্ত নেতা-কর্মীর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেছেন, ‘গোটা চুয়াডাঙ্গা জেলাটা সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভরা ছিল। শেখ হাসিনার নির্দেশে মো. নাসিম ও আমার নেতৃত্বে তা উৎখাত করা সম্ভব হয়েছে। আমরা চুয়াডাঙ্গার মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাই। এর মধ্যে অনেক মিয়ারা আছে, যারা তখন সন্ত্রাসী কর্মকা- করে বেড়াত। তারা এখন অনেকে নেতা হয়েছে। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নের চরম শিখরে পৌঁছাতে যাচ্ছে, ঠিক তখন আমাদের সাধারণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার জন্য কিছু অবাঞ্ছিত লোক জনসভার নামে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সাবধান হয়ে যাও মিয়ারা! অনেক দেখেছি আমি। আন্ডারগ্রাউন্ড দেখেছি, আইয়ুব খান দেখেছি, জিয়াউর রহমান দেখেছি। এখন দুই-চারটে পুঁটি মাছের মতন লাফালাফি করো না। আমি যদি মনে করি কেউ মাথাভাঙ্গা ব্রিজ পার হতে পারবা না, আমি যদি মনে করি ওই পৌরসভায় কেউ যাবে না, যাবে না। ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না, মানুষ বুঝতে শিখেছে, জানতে শিখেছে। কোনো রকম ধোঁকাবাজি দিয়ে কাজ হবে না।’দলের মধ্যে থাকা কিছু বিক্ষিপ্ত নেতা-কর্মীর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেছেন, ‘গোটা চুয়াডাঙ্গা জেলাটা সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভরা ছিল। শেখ হাসিনার নির্দেশে মো. নাসিম ও আমার নেতৃত্বে তা উৎখাত করা সম্ভব হয়েছে। আমরা চুয়াডাঙ্গার মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাই। এর মধ্যে অনেক মিয়ারা আছে, যারা তখন সন্ত্রাসী কর্মকা- করে বেড়াত। তারা এখন অনেকে নেতা হয়েছে। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নের চরম শিখরে পৌঁছাতে যাচ্ছে, ঠিক তখন আমাদের সাধারণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার জন্য কিছু অবাঞ্ছিত লোক জনসভার নামে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সাবধান হয়ে যাও মিয়ারা! অনেক দেখেছি আমি। আন্ডারগ্রাউন্ড দেখেছি, আইয়ুব খান দেখেছি, জিয়াউর রহমান দেখেছি। এখন দুই-চারটে পুঁটি মাছের মতন লাফালাফি করো না। আমি যদি মনে করি কেউ মাথাভাঙ্গা ব্রিজ পার হতে পারবা না, আমি যদি মনে করি ওই পৌরসভায় কেউ যাবে না, যাবে না। ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না, মানুষ বুঝতে শিখেছে, জানতে শিখেছে। কোনো রকম ধোঁকাবাজি দিয়ে কাজ হবে না।’গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যাপক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ‘ভ্যাকসিন হিরো ও চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ পুরস্কার পাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার এসব কথা বলেন।এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘দলের মধ্যে যারা বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে হবে। যারা চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে জনসভার নামে আজে-বাজে কথা বলে, ওই সব লোকদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, বেশি কথা বললে পরিস্থিতি ভালো হবে না। কেউ জিহব্বা টেনে ছিঁড়ে নিয়ে যেতে পারে। মুখে লাগাম লাগাও, অসুবিধা আছে।’জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘আমরা দুই এমপি এক জায়গায় হয়েছি। আমরা চাই, চুয়াডাঙ্গা জেলার সার্বিক উন্নয়ন। আমরা জীবননগর থেকে আলমডাঙ্গা পর্যন্ত রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, ব্রিজ-কালভার্ট অনেক কিছুই করেছি। যেটুকু বাকি আছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে শেষ করব। পাঁচ বছরও লাগবে না, যেটুকু বাকি আছে আগামী তিন বছরের মধ্যে হয়ে যাবে। তবে চোরচুট্টাদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। যারা বরাদ্দের টাকা নিয়ে গিয়ে নিজেদের জমির ওপর ড্রেন বানায়, পুকুর কাটে, তাদের সম্পদের তদন্ত হবে। যে উপজেলা পরিষদের টাকা তছরুপ করেছে, পৌরসভার কাজে অনিয়ম করেছে, তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে দুদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। গুজবে কান দেবেন না, আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে তারা মাঠে নামবে। আমার আর টগরের মধ্যে কোনো বিভেদ হবে না। কিন্তু আপনাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হবে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, কেউ যেন আপনাদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে না পারে।’এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ব দরবারে আজ তিনি সম্মানিত। এক-দুটি নয়, ৪০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। দেশে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করেছেন বলেই তাঁকে এত সম্মানিত করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যে কাজ পারে নাই, তা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেষ করছেন। ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে তাঁকে শাহাদত বরণ করতে হয়েছে। এরপর দলের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আবারও আমাদের নেত্রীকে ষড়যন্ত্র করে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। দেশের মঙ্গলের জন্যই সৃষ্টিকর্তা তাঁর মঙ্গল করেছেন। তিনি দেশের জন্য যা করেছেন, অতীতের কোনো সরকার এমন কাজ করেনি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ আজকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সব ভেদাভেদ ভুলে শেখ হাসিনা তথা মূল ¯্রােত আওয়ামী লীগের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। মূল ¯্রােতের বাইরে গেলে হারিয়ে যেতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সারা বিশ্ব যখন সম্মানিত করছে, ঠিক সেই সময়ও কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে, কোনো রকম অপশক্তি মাথাচাড়া দিলে যে যেখানে আছেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শত্রু শত্রুই, শত্রু কখনো মিত্র হবে না। তারা দেশটাকে পেছনের দিকে ঠেলে নিয়ে যেতে চায়। আমার ঘরের মধ্যেও শত্রু রয়েছে, ঘরের শত্রু বিভীষণ। বাড়াবাড়ি করলে ওরও পুতে দিতে হবে। কোনো ক্ষমা নেই।’সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ হাজি আজগার টগর বলেন, ‘২০০৮ সালে যখন শেখ হাসিনা প্রথম মনোনয়ন দিয়েছিলেন, আমি তখন দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছিলাম। তখন দেখেছি, জনগণ চাল কিনে খেতে পারত না। বিএনপি-জামায়াতের দখলে ছিল পুরো নির্বাচনী এলাকা। সেই বাংলাদেশকে জননেত্রী শেখ হাসিনা কোথায় নিয়ে গেছেন, আপনারা দেখেন। আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে আরও উন্নত অবস্থানে অধিষ্ঠিত হতাম। সদিচ্ছা থাকলে যে দেশের উন্নয়ন করা যায়, তা পুরো বিশ^কে দেখিয়ে দিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আজ সারা বাংলাদেশ যে গতিতে এগোচ্ছে, চুয়াডাঙ্গা জেলাও সেই গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছে।’দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে উল্লেখ করে এমপি টগর বলেন, ‘আমাদের মামা (ছেলুন জোয়ার্দ্দার)-ভাগ্নের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। কিছু মানুষ ভদ্র বেশে খুব সুন্দরভাবে মানুষের মধ্যে এসে বিভেদ লাগিয়ে দেয়, ঘরে ঘরে বিভেদ লাগিয়ে দেয়, বারবার যে কেউ ডাকলেই সুন্দর চেহারাখানা দেখিয়ে খুব ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ করতে চায়, সেই সব মানুষ থেকে সাবধান থাকেন। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ছেলুন জোয়ার্দ্দার যে দিন আমাকে ডাকবেন, আমি অবশ্যই জনসভায় হাজির হব। এর বাইরে আমি কোনো দলীয় মিটিং করতে যাব না। সরকারি মিটিং আমি করতে যাব। একটা শিষ্টাচার আছে, যা দল করতে গেলে লাগেই। আমি মনে করি, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আমাদের রাজনৈতিক গুরু, আমরা তাঁকে রাজনৈতিক গুরু মেনে আমাদের জেলা আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে সেই জামায়াত-বিএনপির দোসরদের দল থেকে বিতাড়িত করে চুয়াডাঙ্গায় ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত করব।’চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নানের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন হেলা, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আফজালুল হক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান নান্নু, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গণু, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মর্তুজা, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝণ্টু, জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলম রঞ্জু, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নুরুন্নাহার কাকলি ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। এর আগে বেলা তিনটা থেকে জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী, পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সাধারণ নেতা-কর্মীরা খ- খ- মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হন। এদিকে, সমাবেশ চলাকালীন প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় চুয়াডাঙ্গা শহরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অফিস-আদালত শেষে বাড়ি ফিরতে যানবাহন না পেয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষদের।