হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কক্সবাজার প্রতিনিধি::
টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে পাহাড়ি রোহিঙ্গা স্বশস্ত্র ডাকাত দলের হাতে অপহৃত ৩জনের মধ্যে এক রাজমিস্ত্রীর গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মহান মে দিবস আর পবিত্র রমজান মাসে একজন রাজমিস্ত্রীর এই ধরনের নির্মম মৃত্যু মানুষের মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
১ মে সকাল সাড়ে ১১টারদিকে উপজেলার হোয়াইক্যং মডেল ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী, হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মশিউর রহমানের নেতৃত্বে স্থানীয় জনসাধারণের একটি দল ঊনছিপ্রাং রইক্ষ্যং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পশ্চিমে শীলের ঝিরি উঠনি পাহাড় হতে মিনা বাজারের মৌলভী কাশিমের পুত্র আক্তার উল্লাহ (২৫) এর গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে আইসি মশিউর রহমান নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত আক্তার পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। সে ফকিরের ঘোনা এলাকায় শসা ক্ষেত দেখতে গিয়েই স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা ডাকাত দলের হাতে অপহৃত হয়ে তাদের নির্মম নির্য়াতনে মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য, ২৯ এপ্রিল রাতে তারাবী চলাকালীন হোয়াইক্যং পশ্চিম মিনা বাজার শামসু ফকিরের ঘোনায় ক্ষেত ও ধান চাষাবাদ পাহারা দেওয়ার সময় স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা ডাকাত দলের সদস্যরা স্থানীয় মৌলভী আবুল কাশেমের পুত্র আখতার উল্লাহ (২৫), মুহাম্মদের পুত্র মোঃ শাহেদ (২৬) ও মৃত মোঃ কাশেমের পুত্র মুহাম্মদ ইদ্রিস (৩০) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে পরদিন স্বজন, এলাকাবাসী ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ে তল্লাশী অভিযানে যায়। মনে হয় এতেই অপহরণকারী চক্র ক্ষুদ্ধ হয়ে আক্তার উল্লাহকে গুলি করে নির্মমভাবে খুন করে ফেলে দিয়ে যায়। সকালে স্বজনেরা অপহৃতদের সন্ধান করতে পাহাড়ে গিয়েই আক্তারের গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে সবাইকে অবহিত করে। পরে সকলে সমন্বিতভাবে গিয়ে আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা অদূরে সুউচ্চ ও গভীর টঙ্গির পাহাড়ে কিছু মানুষের অবস্থান ও আনাগোনা প্রত্যক্ষ করেছেন। এখনো পাহাড়ি স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা ডাকাত দলের হাতে মুহাম্মদের পুত্র মোঃ শাহেদ (২৬) ও মৃত মোঃ কাশেমের পুত্র মুহাম্মদ ইদ্রিস (৩০) আটক রয়েছে। তাদের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম অজানা আতংক দেখা দিয়েছে।
গভীর পাহাড় হতে গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত আক্তার উল্লাহর মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, পাহাড়ে অবস্থানকারী স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা দূবৃর্ত্তরা যেহারে অত্র ইউনিয়নের পাহাড়ি জনপদের চাষা ও বাসিন্দাদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় এব্ং নির্মমভাবে খুন করছে। অবিলম্বে এলাকাবাসীকে এসব থেকে রক্ষার্থে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সমন্বয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর দাবী জানান।
এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণকারী উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বশস্ত্র সদস্যরা পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে স্বশস্ত্র অবস্থান নিয়ে এসব মাদক বাণিজ্য, ভাড়াটে খুনী, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষের জীবন-যাপন দূর্বিসহ করে তুলছে।