নিউজ ডেস্ক:
একজন মার্কিন জেনারেল বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছেন, জাতিসংঘ শান্তি রাক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহনীর নেতৃত্ব এবং অংশগ্রহন আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রশংসিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর উপ প্রধান লেফটেন্ট জেনারেল ড্যানিয়েল আর হোকানসন বলেন, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের ৭ হাজার সৈন্য ও পুলিশ সারা বিশ্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় এবং চিকিৎসা সেবা ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো কর্মকান্ডে বিশেষ অবদান রাখছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃকাকালে জেনারেল হোকানসন বলেন, দশ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীর আশ্রয় প্রদান ও তাদেরকে সবধরনের মানবিক সহায়তা দেয়ায় বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আজ এখানে প্রাপ্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানা যায়।
বাংলাদেশের ৪৭তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন উপলক্ষে মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মার্কিন জেনারেল হোকানসন গেস্ট অব অনার হিসাবে বক্তব্য রাখেন।
মার্কিন আর্মি রিজার্ভের উপ প্রধান এসি রোপার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে পেন্টাগনের প্রতিনিধিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং ডিফেন্স অ্যাটাসি ব্রিগেডিয়ার মঈনুল হাসানও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে হোকানসন ঢাকা- ওয়াশিংটন নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং বিশেষ করে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মার্কিন ন্যাশনাল গার্ডের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। আমরা একে অন্যের কাছ থেকে শিখছি এবং পারস্পরিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। তিনি বলেন, অঞ্চলে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিবেশে সংঘর্ষ বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দুটি বাহিনী এক সঙ্গে অধিক শক্তিশালি।
তিনি বলেন, আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা নিভর্র করছে আমাদের মধ্যে সমঝোতা এবং দু’দেশের জনগনের মধ্যে বন্ধুত্বের ওপর। হোকানসন শুধুমাত্র বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা এবং নিরপত্তার ক্ষেত্রেই নয়, সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন, সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে বাংলাদেশ গর্বিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাদের আত্মত্যাগ ও অবদান অতুলনীয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুজনিত দুর্যোগকালে অবিস্মরণীয় মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মাকির্ন সহযোগিতায় দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের বাইরে নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ, চোরাচালান ও মানবপাচার এবং মাদক চোরাচালান বন্ধে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ অবদান রাখছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিকায়ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করছে। তিনি বিআইপিএসওটি স্থাপন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউট স্থাপনে কারিগরি সহায়তা প্রদানের প্রশংসা করেন। জিয়াউদ্দিন বাংলাদেশের জলসীমার নিরাপত্তা জোরদারে অটোমেটেড আইডেন্টিফিকেশন ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাসি রাষ্ট্রদূত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈনুল হাসান শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের উল্লেখযোগ অনুষ্ঠানের অংশ বিশেষ স্ক্রীনে দেখানো হয় এবং দিবসটি উপলক্ষে একটি কেক কাটা হয়।