শনিবার (২৬ মে) সকালে উপজেলার পিপরুল গ্রাম থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, গত ১১বছর পূর্বে বড়াইগ্রাম উপজেলার কৈডিমা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে শরিফা আক্তার ছবি সাথে নলডাঙ্গার পিপরুল শেখপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মিল্টন হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছবির স্বামী মিল্টন তার চাকুরীর জন্য রিয়াদে পাড়ি জমায়। এর পর তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল। পরবর্তিতে প্রতি বছরই প্রায় মিল্টন দেশে বেড়াতে আসতো। গত কয়েক বছর মিল্টন দেশে না আসলে তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এনিয়ে পরিবারের সকলের সাথে শরিফা মাঝে মাঝেই ঝগড়ার এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারধর করতো। ঘটনাটি শরিফা বেশ কয়েকবার তার বাবার বাড়ীর লোক জনকে জানিয়েছে। তারাও শরিফার শ্বশুর,শ্বাশুড়ী ও ননদ সহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলে মিমাংশা করেছেন। এভাবেই চলছিল তাদের সংসার।
গতরাতে (শুক্রবার) খাওয়া শেষে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে শরিফা তার শোবার ঘরে চলে যায়। এরপর শনিবার (২৬ মে) সকালে বাড়ীর বাথরুমে গলায় দড়ি প্যাঁচানো অবস্থায় শরিফার মৃতদেহ ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজন।
পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত শরিফার ভাই শাহ আলম জানান, তিনি সকালে এলাকাবাসীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পেরে বোনের বাড়ীতে আসেন। সেখানে পৌছে তিনি তার বোনের গলায় দড়ি প্যাঁচানো মৃতদেহ দেখতে পায়। তিনি বলেন দীর্ঘ দিন ধরেই তার শ্বশুড়,শ্বাশুড়ী ও ননদ সহ পরিবারের লোকজন তার সাথে খারাপ আচরন করা সহ মারধর করছিল।
এবিষয়ে তার স্বামী প্রবাসী মিল্টনকে জানালেও কোন লাভ হয়নি। মিল্টন নিজেও মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। তারা বলেন এটা পরিকল্পিত একটা হত্যা। এর সঠিক রহস্য বের করে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়া হোক।
এদিকে নিহতের শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের দাবী মোবাইল ফোনে কথা বলা শেষে এক পর্যায়ে কোন এক সময় শরিফা নিজেই আত্মহত্যা করেছে। এর সাথে তাদের পরিবারের কোন সদস্য জড়িত নয়। তাদের ছেলে বিদেশে বসবাস করে। প্রতিবছরই ছুটি কাটাতে দেশে আসে এবং সেই সময় তাদের সংসার বেশ ভালোই কাটে। কোন রকমের ঝামেলা তাদের সংসারে নেই। তারাও এর সঠিক রহস্য উদঘাটনের দাবী জানান।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর হোসেন খন্দকার জানান, বেলা ১১ টার দিকে স্থানীয় মেম্বার ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে তিনি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌছে বাথ রুম থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করেন। পরে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। নিহতের বাবা ,ভাই সহ অনেকেই ঘটনাটি হত্যা বলে দাবী করছেন। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়না তদন্তের পর সঠিক কারন জানা যাবে। তবে নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন।