একবিংশ শতাব্দীর প্রথম মহামারি কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস ২০১৯ সালের শেষদিকে চীন থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সেটি মহামারির আকার ধারণ করে নেয়। থমকে যায় পুরো বিশ্ব, সেইসাথে প্রাণ হারায় লাখ লাখ মানুষ।
এবার সেই মহামারির ৫ বছর পর আবারও নতুন ব্যাধি আতঙ্কে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন। যদিও এই আতঙ্কে যে শুধু চীন রয়েছে তা নয়, এর বিস্তার ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে জাপান এবং মালয়েশিয়াতেও।
এখনো নিশ্চিত হওয়া না গেলেও, প্রাথমিক ধারণা, রাইনোভাইরাস ও হিউম্যান-মেটা-নিউমো (HMP) ভাইরাসের সংক্রমণে দেশটিতে রহস্যময় এই রোগের প্রাদুর্ভাব। এটির লক্ষণ শনাক্ত হয়েছে জাপানেও। ভাইরাসটির মূল লক্ষণ শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা।
কেমন এ ভাইরাসের মিউটেশন? আর, কতোটা ভয়াবহ সংক্রমণ?
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরীন। তিনি বলেন, এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এমনকি এ নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।
এসময় তিনি আরও বলেন, শ্বাসতন্ত্রে ছড়ায় এমন অন্যান্য ভাইরাসের মতোই এটি। অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরণের ভাইরাসের আক্রমণের মতোই, যার উপসর্গ হিসেবে জ্বর-সর্দি-কাশি-ঠাণ্ডা হয়ে থাকে। কোভিড-১৯ একেবারে ভিন্ন ও নতুন আবহের ভাইরাস হওয়ায় এর প্রাদুর্ভাব বা মহামারির রেশ এতোটা বিস্তার হয়েছিলো। তবে HMP নিয়ে আতঙ্কিত না হবারও পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আগেও হিউম্যান-মেটা-নিউমো (HMP) ভাইরাসের অস্তিত্ব ছিলো। এখনও শিশু আর প্রবীণদের শরীরে মিলবে এটির অস্তিত্ব। তবে, আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। করোনার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই, সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মুশতাক হোসেন বলেন, অধিকাংশ ভাইরাসেরই সরাসরি কোনো ওষুধ নেই, তবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে; এটির ক্ষেত্রেও তাই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কি না, সেবিষয়ে চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, HMP ভাইরাস নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে শনাক্ত হয়েছিলো ২০২৩ সালে।