রাজু ও শরীফুলকে খুঁজছে পুলিশ, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গায় আসামিদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীর মাদ্রাসাপড়–য়া এক কিশোরীকন্যাকে (১৩) গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল রোববার দুপুরে লাল্টু নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তবে পলাতক রাজু ও শরীফুলকে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। এ ঘটনায় নির্যাতিতা কিশোরীর বাবা আনোয়ারুল বাদী হয়ে গতকাল দুপুরে আলমডাঙ্গা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। নির্যাতিতা ওই কিশোরীকে গতকাল বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার নতিডাঙ্গা আবাসনের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েকে একই এলাকার জয়নালের ছেলে লাল্টু (৩৫), মৃত সভা ভোরামীর ছেলে শরীফুল (৪০) ও মিলনের ছেলে রাজু (৩০) প্রায়ই উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ ঘটনায় ওই মেয়ের মা শীলা খাতুন বাদী হয়ে আমলি আদালতে মাসখানেক আগে শ্লীলতাহানির একটি মামলা করেন। ওই মামলার জেরে গত শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসন এলাকায় ওই হতদরিদ্র পরিবারের বাড়িতে হামলা করেন লাল্টু, শরীফুল ও রাজু। এ সময় নির্যাতিতার বাবা-মাকে মারধর করে মেয়েকে পাশের বাঁশবাগানে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তাঁরা। পরে এ ঘটনা পুলিশকে জানালে প্রাণনাশেরও হুমকি দেন অভিযুক্তরা।
ধর্ষণের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মা শীলা খাতুন জানান, গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে হঠাৎ তাঁদের টিনের চালের ওপর ইটের খোয়া পড়তে থাকে। কিছুক্ষণ পর তাঁরা বাইরে বের হলে বাড়ির মধ্যে রাজু ও শরীফুল প্রবেশ করেন। পরে লাল্টু এসে তাঁদের মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদান করেন। মামলা তুলবেন না বলে জানালে শীলা খাতুন ও তাঁর স্বামী আনোয়ারুলকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাঁদের মেয়েকে অভিযুক্তরা তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
গতকাল রোববার দুপুরে পুলিশ ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে নির্যাতিতা ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা থানায় নিয়ে আসে। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নতিডাঙ্গা আবাসন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে লাল্টুকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। অন্য দুই আসামি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান। এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার (প্রশাসন), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ (সদর সার্কেল) ও আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান।
আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই তাঁদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মুন্সী বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসাছাত্রীকে আমরা উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন। আসামিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।’