নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের অর্থনীতি গত কয়েক বছর ধরে শিল্পায়নের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু এর মধ্যেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের চাহিদা কমছে না।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরেই ধারাবাহিকভাবে কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় বাড়ছে। এমনকি প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে কৃষি খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ছে।
ইপিবির মার্চ মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ২৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৮২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ইপিবির ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৩০ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ২ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৫৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
কৃষিপণ্যের এই ধারাবাহিক রপ্তানি আয় বৃদ্ধিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কৃষিবিদ এবং সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এই খাতের প্রতি আরেকটু জোর দিলে কৃষি আয় আরো বাড়ানো সম্ভব।
বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এফ এম ফকরুল ইসলাম মুন্সী এ বিষয়ে বলেন, ‘সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে কৃষি ও কৃষিপণ্যের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য বিশ্বের ১৪০টি দেশে যায়। আমরা আশা করছি, এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৫৯ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। হিসাব মোতাবেক, ধারাবাহিকভাবে কৃষি খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে চা রপ্তানিতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে এ খাতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে চা রপ্তানিতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে এ খাতে আয় হয় ২২ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫৯ দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ওই সময়ের চেয়ে এ খাতের আয় ৭১ দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়েছে; আগের অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে চা রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
তবে জুলাই-ফেব্রুয়ারি মেয়াদে সবজি রপ্তানিতে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এ সময়ে আয় হয়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৩১ শতাংশ কম। আর জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে সবজি রপ্তানিতে ৫ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয় ৪ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ কম। কিন্তু আগের অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের তুলনায় এ খাতের রপ্তানি আয় ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। এমনকি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় এ খাতের রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সবজি রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৪ কোটি ৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।