দুধ একটি সুষম খাবার। শরীরের জন্য উপকারী খাবারের মধ্যে দুধ একটি। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি-১২, নিয়াসিন ও রিবোফ্লভিন। দুধের নানা পুষ্টিগুণ শরীরকে সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত রাখতে পারে।
সদ্যোজাত শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ, দুধ সকলের জন্যই উপকারী। দুধ কোন সময় এবং কতটুকু খাওয়া হচ্ছে তা জানা জরুরি। অনেকেই দুধ সকালে খেয়ে ফেলেন, তার পরেও গলা-বুক জ্বালা শুরু হয়। যাদের গ্যাসের সমস্যা, তাদের সকালে দুধ না খাওয়াই ভাল। গ্যাসের সমস্যা যাদের আছে তারা রাতে দুধ খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ঠান্ডা দুধ খেলেই উপকার বেশি পাওয়া যাবে। শিশুদের জন্য আবার দুধ খাওয়ার আদর্শ সময় হল সকালবেলা। তবে রাতে ঘুমোনোর আগে দুধ খেলে অনিদ্রার সমস্যা যেমন দূর হয়, তেমনই শরীর অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীদের মতে, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ভিটটামিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ দুধ তখনই শরীরের উপকারে লাগবে যখন তা সঠিক সময়ে ও যথাযথ পরিমাণে খাওয়া হবে। ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানী ওয়াল্টার উইলেটের মতে, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষ দিনে যদি পরিমাপ মতো দুধ খান, তা হলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি তো হবেই না, বিবিধ শারীরিক সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী দিনে ২-৩ কাপ দুধ খেতেই পারেন, তবে তার বেশি নয়। এক জন পুরুষ সেখানে ৩-৪ কাপ দুধ খেতে পারেন। তবে যদি দুগ্ধজাত দ্রব্য, যেমন পনির, ছানাও খান, তা হলে দিনে ২ কাপের বেশি দুধ খাওয়া যাবে না।
শিশুদের ক্ষেত্রে এই পরিমাপ আলাদা। ১২ থেকে ২৪ মাসের শিশুকে দিনে ২-৩ কাপ দুধ দেওয়া যেতে পারে। ২ থেকে ৫ বছরের শিশু দিনে দুই থেকে আড়াই কাপের বেশি দুধ দেওয়া যাবে না। আবার ৫ থেকে ৮ বছর বয়সের শিশুরাও দিনে আড়াই কাপের মতো দুধ খেতে পারে। ৯ বছরের উপরে দিনে তিন কাপের মতো দুধ খাওয়া যেতেই পারে।
যদি গরুর দুধে অ্যালার্জি থাকে, তা হলে উদ্ভিদজাত দুধ খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম, ওট্স, নারকেল ও সয়াবিন থেকে এই দুধ পাওয়া যায়। আমন্ড মিল্ক, কোকোনাট মিল্ক, ওট্ মিল্ক এবং সয়া মিল্ক সবচেয়ে পরিচিত। প্রাণিজ দুধের বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারে এই দুধ।
তবে শিশুদের দুধ খাওয়ানোর আগে দেখে নিতে হবে, তারা দুধ হজম করতে পারছে কি না। যদি দুধ খেলেই বমি ভাব আসে অথবা গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে দুধ না খাওয়াই ভাল। সূত্র: আনন্দবাজার