রেলওয়ে (পশ্চিমাঞ্চল) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা-দর্শনা রুটে ট্রেন থাকছে দুইটি। ঢাকা-দর্শনা রুটে প্রথম ট্রেনটি দর্শনা থেকে সকাল সাতটায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে দুপুর ১২টায় এবং ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে দর্শনায় পৌঁছাবে বিকেল ৪টায়। দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় ছেড়ে গিয়ে দর্শনায় পৌঁছাবে ৯টা ৪০ মিনিটে এবং দর্শনা থেকে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে পরদিন ভোর ৫টায়। খুলনা থেকে ঢাকা কুষ্টিয়া, মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর রেলস্টেশন হয়ে ঢাকাগামী সরাসরি চলাচলকারী তিনটি ট্রেন চিত্রা, বেনাপোল ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস সরিয়ে নিয়ে যশোরের রুপদিয়া বা পদ্মবিলা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে ট্রেন দুটি।
বর্তমানে দেশে লোকাল, মেইল, কমিউটার ও আন্তঃনগর এই চার ধরনের ট্রেন চলাচল করে। লোকাল ট্রেনের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩৯ পয়সা আর আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া নন-এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ১৭ পয়সা। আর কিলোমিটার প্রতি এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা।
দর্শনা-চুয়াডাঙ্গা রুটে নতুন ট্রেন, বাঁচবে সময় কমবে ভোগান্তি অন্যদিকে খুলনা থেকে রাজশাহী, উত্তরবঙ্গ চিলাহাটি ট্রেন আগের মতোই চলাচল করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়ক লাইনের মতো ট্রেন লাইনও ভাগ হচ্ছে। আগে টিকিট সময় মতো পেতাম না, ব্ল্যাকে কিনতে হতো। এই দুটি ট্রেন চালু হলে আমাদের সুবিধা হবে। যাত্রীরা টিকিট সময়মতো পাবো বলে আশা করি। এছাড়া ঢাকায় যাওয়ার জন্য সময়ও কম লাগবে।
তবে নতুন দুটি ট্রেন চালু হওয়াতে স্টেশন সংশ্লিষ্ট এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, স্টেশন পার্শ্ববর্তী আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কমতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
চুয়াডাঙ্গা স্টেশন সংলগ্ন এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকার তিনটি ট্রেন যদি এ রুটে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমাদের ব্যবসা কমবে। কারণ যে দুটি ট্রেন চলাচল করবে ওই সময় কেউ সেভাবে হোটেলে থাকবে না।
এছাড়া দর্শনার স্টেশন এলাকার ভ্যানচালক করিম মিয়া বলেন, দর্শনা থেকে নতুন ট্রেন চালু হলে আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। কারণ খুলনা থেকে অনেক যাত্রী দর্শনা বর্ডার হয়ে ইন্ডিয়া যায়। নতুন রুট চালু হলে আমাদের ভাড়াগুলো কম হবে।
এছাড়া ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী দর্শনার সন্তান আবু সাইদ বলেন, নতুন দুইটি ট্রেন চালু হওয়াতে আমাদের মতো ঢাকাগামী ও ঢাকা কেন্দ্রীক ব্যক্তিদের সুবিধা। কারণ এই দুটি ট্রেন যে সময় চলাচল করবে, একজন ব্যক্তি দিনে ঢাকা গিয়ে কর্ম-কাজ শেষ করে আবার দিনে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিকিট চেকার (টিটি) বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যে মাস্টার প্ল্যান করছে, এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। আমাদের ডিউটি সলিড উইল পরিবর্তন হবে এবং আমি মনে করি দর্শনার চেকপোস্টের যাত্রীদের তাদের গন্তব্যে দ্রুত যেতে সুবিধা হবে। আর সব ট্রেনই যেহেতু চুয়াডাঙ্গা হয়ে যাবে, সেক্ষেত্রে সবাই সুবিধা পাবে।
দর্শনা রেলওয়ে বুকিং সহকারী মিন্টু কুমার রায় বলেন, চলতি বছর জুলাই থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মাস্টার প্ল্যান চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ নতুন রুটের কর্যক্রম শুরু হলে রেলওয়েতে কর্মরত ব্যক্তিদের অনেক সুবিধা হবে। ট্রেনের চাপ কম থাকবে, এতে দুর্ঘটনার হারও কমে আসবে। বিশেষ করে দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার যাত্রীদের সুবিধা হবে। দিনে ঢাকায় গিয়ে আবার দিনে কাজ শেষ করে চলে আসতে পারবে। অন্যদিকে ট্রেনের টিকিটও সব সময় সহজে মিলবে।