নিউজ ডেস্ক:দর্শনায় অবৈধ উপায়ে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের হিড়িক চলছে। আইনের তোয়াক্কা না করে যে যার ইচ্ছা মতো পুকুর খননের নামে নিজ জমিতে মাটি কেটে ও বালু উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছাড়াই মাছ চাষের নামে জমিতে একটির পর একটি পুকুর খননের করে মাটির গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় বিপাকে পড়েছেন পার্শ্ববর্তী আবাদি জমির মালিকেরা। এক্সকাভেটর যন্ত্র (ভেকু মেশিন) দিয়ে মাটির গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় পার্শ্ববর্তী আবাদি জমি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বেশ কিছু চাষি পরিবার। পার্শ্ববর্তী জমির চাষিরা জানান, ‘যেভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, তাতে করে আমাদের একমাত্র আবাদি জমিটি ঢসে ভবিষ্যতে বালু-গর্ভে তলিয়ে গেলে আমরা আর চাষ করতে পারব না। ফলে আমরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’ বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পার্শ্ববর্তী আবাদি জমির মালিকেরা বারবার নিষেধ করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের ছটাংগার মাঠ ও পরানপুর গ্রামের বেলে মাঠ, এ দুই গ্রামের দুই মাঠের বেশকিছু জমির মালিকেরা অনেক দিন আগ থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে হাত করে অবৈধ উপায়ে মাটি ও বালু বিক্রি করে আসছেন। এ সব বালু ব্যবসায়ীরা পূর্বে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করলেও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সরকার ২০১০ সালে মাটি ও বালুমহাল আইন পাস করলে অবধৈ ড্রেজার মেশিন বাদ দিয়ে বর্তমানে ভেকু মেশিন দিয়ে পুকুর কাটার নামে পুরোদমে চালাচ্ছেন মাটি ও বালুর ব্যবসা। এতে পার্শ্ববর্তী শত শত বিঘা আবাদি জমির ফসল নষ্টসহ বিভিন্ন ফলদ বাগান বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। এ ছাড়া পুকুর কেটে বালু উত্তোলন করার পর এসব বালু পার্শ্ববর্তী ফসলি জমিতে রাখার ফলে জমির উর্বরতাও নষ্ট হচ্ছে দিন দিন। অন্যদিকে, প্রতিদিন ১০০-১২০টি মাটি ও বালুভর্তি ট্রলি ও ট্রাক্টার মাঠে আসা-যাওয়ার ফলে একমাত্র রাস্তাটিরও বেহাল দশা।
দর্শনা পৌরসভার দক্ষিণ চাঁদপুর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান খালেকুজ্জামান খালেক এ বিষয়ে বলেন, ‘এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ও চাষিদের স্বাক্ষরসহ একটি দরখাস্ত নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। আমি ওই দরখাস্তে লিখে দিয়েছি, সরোজমিনে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন জানান, ‘পুরো উপজেলা থেকে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এভাবে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’